উচ্ছেদ অভিযানকে কেন্দ্র করে ভারতের উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের মাথুরা শহরে জনতা-পুলিশ সংঘর্ষ হয়েছে। এ ঘটনায় দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ ২৪ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন প্রায় অর্ধশত।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সংঘর্ষে মাথুরা শহরের পুলিশ সুপার মুকুল দ্বিবেদী ও স্থানীয় ফারাহ পুলিশ স্টেশনের উপপরিদর্শক (এসআই) সন্তোষ কুমার নিহত হয়েছেন। নিহত অপর ২২ জনই বিক্ষোভকারী। মৃতের সংখ্যা আরো বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। আহতের সংখ্যা এরই মধ্যে ৪৮ ছাড়িয়েছে। হিংসা ছাড়ানোর অভিযোগে পুলিশ ১২৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। সব মিলিয়ে মাথুরা শহরে ভয়াবহ পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

মাথুরা শহরের জহরবাগ এলাকার একটি অংশের দখলকারীদের হটাতে গেলে গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে তাদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ বাধে। দখলকারীরা প্রথমে পুলিশের দিকে গুলি ছোড়ে। উত্তরে পাল্টা গুলি ও কাঁদানো গ্যাসের শেল ছোড়ে পুলিশ। দুই পক্ষের সংঘর্ষে মাথুরার জহরবাগ এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। শুক্রবার সকালে পরিস্থিতির আরো অবনতি ঘটে। উচ্ছেদ অভিযানে নেমে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র উদ্ধার করেছে পুলিশ।

মাথুরার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ সিং যাদব। ঘটনার দ্রুত প্রতিবেদন চেয়েছেন তিনি। পাশাপাশি এ ঘটনায় উচ্চ পর্যায়ের তদন্তেরও নির্দেশ দিয়েছেন যাদব। ঘটনায় মৃত পুলিশকর্মীদের পরিবারপিছু ২০ লাখ রুপি করে সাহায্য দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী।

জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরেই মাথুরার জহরবাগ এলাকায় প্রায় ১০০ একর সরকারি জমি দখল করে রয়েছেন অন্তত তিন হাজার দখলদারী। এই দখলকারী ধর্মীয় সংস্থার কর্মীরা ‘আজাদ ভারত বিধিক বৈচারিক ক্রান্তি সত্যাগ্রহি’ নামে একটি  গোষ্ঠী গঠন করে। আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও তারা সরকারি জমির দখল ছাড়েনি। এলাহাবাদ হাইকোর্টে এক জনস্বার্থ মামলার জেরে হাইকোর্টের রায় হাতে নিয়ে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ওই এলাকায় পুলিশ উচ্ছেদ অভিযানে নামে।

স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, ধর্মীয় সংস্থার কর্মীরা পুলিশের ওপর প্রথমে পাথর ছোড়ে, তারপর কান্ট্রিমেড পিস্তল থেকে গুলি ছোড়ে। হ্যান্ডগ্রেনেডও ছোড়া হয়। এ ছাড়া এলপিজি সিলিন্ডারও ফাটানো হয়। গ্রেনেড ও সিলিন্ডার বিস্ফোরণের কারণে এলাকার কয়েকটি বস্তিতে আগুন ধরে যায়। এর পরই পুলিশ কাঁদানো গ্যাসের শেল ছোড়ে। বিক্ষোভকারীরা পিছু না হটায় বাধ্য হয়ে গুলি ছোড়ে পুলিশ।

সর্বশেষ খবরে জানা গেছে,  জহরবাগ এলাকা দখলে রাখা বিক্ষোভকারীদের নেতা রামত্রক্ষ যাদব ও তাঁর সহকর্মীরা কয়েক হাজার সমর্থক নিয়ে পালিয়েছেন। উত্তরপ্রদেশের পুলিশ জানিয়েছে, তাঁদের সন্ধানে এলাকায় চিরুনি তল্লাশি চলছে।