অফশোর ট্রাস্ট থেকে লাভবান হয়েছেন ক্যামেরন
অবশেষে অফশোর ট্রাস্ট থেকে লাভবান হওয়ার কথা স্বীকার করেছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন। কয়েক দিন ধরেই ট্রাস্ট বিষয়ে প্রশ্ন এড়িয়ে গেছেন তিনি। তবে গতকাল বৃহস্পতিবার ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্বীকার করেন, তাঁর প্রয়াত বাবা অফশোর ট্রাস্ট করেন এবং সেখান থেকে তিনি লাভবান হয়েছেন।
অর্থ পাচার বিষয়ে আলোচিত ‘পানামা পেপারস’ ফাঁস হওয়ার পর বিশ্বজুড়েই একরকম তোলপাড় শুরু হয়েছে। নির্দিষ্ট দেশের কর ফাঁকি দিয়ে বিদেশে তহবিল রাখার একটি পন্থা হলো অফশোর ট্রাস্ট। এমন ট্রাস্টের মাধ্যমে বিশ্ব রাজনীতি থেকে খেলাধুলা—সব জগতেরই অনেক রাঘববোয়াল অর্থ পাচারে জড়িত বলে জানা গেছে। তবে এঁদের অনেকেই এটি অস্বীকার করেছেন। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন একে পশ্চিমা ষড়যন্ত্র বলে দাবি করেছেন। এর সঙ্গে সুর তুলেছেন আরো অনেকে। তবে অর্থ পাচারের অভিযোগে এরই মধ্যে সরে গেছেন আইসল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী।
ওয়াশিংটন পোস্ট জানিয়েছে, এই প্রথম যুক্তরাজ্যের কর ফাঁকি দিয়ে করা অফশোর অ্যাকাউন্ট করা এবং সেখান থেকে লাভ পাওয়ার কথা স্বীকার করলেন ডেভিড ক্যামেরন। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার রাতে বিষয়টি স্বীকার করে নেওয়ার পরপরই বিরোধী লেবার পার্টির অন্তত একজন সদস্য প্রধানমন্ত্রীকে পদত্যাগের আহ্বান জানান। তবে এখন পর্যন্ত ক্যামেরন অবৈধ বা নিয়মের বাইরে কিছু করেছেন, এমন নথি পাওয়া যায়নি।
কর ফাঁকি দেওয়ার বিষয়ে বরাবরই সরব ছিলেন ডেভিড ক্যামেরন। তবে যুক্তরাজ্যের কর ফাঁকির সঙ্গে পরিবারের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ তাঁকে লজ্জায় ফেলে। পানামা পেপারসের বরাত দিয়ে দাবি করা হয়, ক্যামেরনের শেয়ার ব্যবসায়ী বাবা অফশোর ট্রাস্টে অর্থ রেখেছিলেন। পানামা পেপারস ফাঁস হওয়ার পর থেকেই যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে বিভিন্ন তথ্য জানানো হয়। একবার বলা হয়, এটি সম্পূর্ণ ‘ব্যক্তিগত ব্যাপার’। পরে বলা হয়, এ মুহূর্তে ট্রাস্টে প্রধানমন্ত্রীর কোনো সংযোগ নেই। আবার এ কথাও বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর পরিবারের কেউ ট্রাস্ট থেকে লাভবান হতে পারবেন না। তবে বৃহস্পতিবার নিজেই সব বিস্তারিত জানালেন ক্যামেরন।
ব্রিটেনের সংবাদমাধ্যম আইটিভিকে ডেভিড ক্যামেরন বলেন, ২০১০ সালে ট্রাস্টে থাকা নিজের অংশ তিনি বিক্রি করে দেন। এর কয়েক মাস পর তিনি ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী হন। ট্রাস্টে ক্যামেরনের অংশের মূল্য ছিল প্রায় ৫০ হাজার মার্কিন ডলার। পানামাভিত্তিক ট্রাস্টের ব্রিটিশ কর দেওয়ার কথা নয়। এরপরও প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর বাবা ব্রিটিশ কর পরিশোধ করেছেন।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন বলেন, ‘আমার কোনো কিছু লুকানোর নেই।’ তিনি তাঁর বাবাকে নিয়ে গর্ববোধ করেন। একই সঙ্গে বাবার কাজ ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠারও সমর্থন করেন তিনি।