গ্রামের বৃদ্ধার পা ছুঁয়ে সম্মান জানালেন মোদি
ভারতের ছত্তিশগড়ের ধামতারি জেলার বৃদ্ধা কুনওয়ার বাঈ। বয়সের কোটা একশ পেরিয়েছে আরো চার বছর আগে। যে গ্রামে তিনি বাস করেন সেখানে সবাই খোলা টয়লেট ব্যবহার করে। অর্থাৎ শৌচকর্মের জন্য আলাদা কোনো স্থান নেই তাদের।
জীবনের প্রায় শেষ সময়ে এসে কুনওয়ার বাঈ শুনতে পেলেন পরিষ্কার ভারত গড়তে হলে খোলা শৌচাগার ব্যবহার করা উচিত নয়। প্রত্যেকের বাড়িতে অবশ্যই আলাদা শৌচাগার থাকা প্রয়োজন। আর এতে উদ্বুদ্ধ হয়ে নিজের বাড়িতে শৌচাগার তৈরির পরিকল্পনা করলেন তিনি। কিন্তু এ ক্ষেত্রে প্রধান বাধা হলো অর্থ। তাই শৌচাগার তৈরির অর্থ জোগাড় করতে বৃদ্ধ কুনওয়ার বাঈ বিক্রি করে দিলেন শখ করে পোষা ৮-১০টি ছাগল।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ছাগল বিক্রির টাকা দিয়ে নিজের বাড়িতে দুটি টয়লেট তৈরির পর কুনওয়ার বাঈ এ কাজে উদ্বুদ্ধ করতে শুরু করলেন গ্রামবাসীকে।
প্রত্যন্ত গ্রামের এক বৃদ্ধার এই কীর্তির কথা শুনে তাঁর সঙ্গে দেখা করেছেন স্বয়ং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। শুধু তাই নয়, গতকাল রোববার রীতিমতো কুনওয়ার বাঈয়ের পা ছুঁয়ে প্রণামও করেছেন তিনি।
এই প্রসঙ্গে নরেন্দ্র মোদি বলেন, ‘১০৪ বছর বয়সী একজন নারী যিনি বাস করেন প্রত্যন্ত গ্রামে, যিনি কখনো টেলিভিশন দেখতে পাননি, সংবাদপত্র পড়েননি। অথচ ভারত পরিষ্কার করতে গ্রামাঞ্চলে শৌচাগার তৈরির বিষয়ে সরকারের নেওয়া কর্মসূচির কথা কোনোভাবে তাঁর কানে গেছে। আর তাতেই উজ্জীবিত হয়ে তিনি নিজের ছাগল বিক্রি করে বাড়িতে শৌচাগার বানিয়েছেন।’
গতকাল রাজান্দগাঁও জেলায় মোদি সরকারের নেওয়া ‘রারবান মিশন’-এর উদ্বোধন করেন নরেন্দ্র মোদি। সেখানেই এসব কথা বলেন তিনি। মোদি বলেন, কুনওয়ার বাঈয়ের নিজের গ্রামকে পরিচ্ছন্ন রাখার এই অবদান ভারতের পরিবর্তনের বড় উদাহরণ।
রারবান মিশনের প্রথম ধাপে ছত্তিশগড়ের রাজান্দগাঁও, ধামতারি, বাসতার ও কবিরধাম এই চারটি গ্রামের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড হাতে নিয়েছে ভারত সরকার। রারবান মিশন নামে এই প্রকল্পের মাধ্যমে গ্রামীণ ও শহুরে জীবনের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করে উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে।