ভারতে উল্কাপাতে নিহতের ঘটনা ভুল দাবি নাসার
ভারতের সংবাদমাধ্যম ও এর সূত্র ধরে বিশ্ব সংবাদমাধ্যমে উল্কাপাতে এক ব্যক্তির নিহতের খবর বেশ ফলাও করে প্রচার হয়েছে। কয়েকদিন আগে ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্যের ভেল্লোর জেলার একটি বেসরকারি প্রকৌশল কলেজ ক্যাম্পাসে।
ভারতের সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী ঘটনাটি এমন, ‘মহাশূন্য থেকে আসা’ বস্তুর আঘাতে কামরাজ (৪০) নামে কলেজের এক বাসচালক নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরো তিনজন। কথিত ‘উল্কাপাতে’র স্থানে বড় একটি গর্ত সৃষ্টি হয়। তবে উল্কাপাতের ঘটনা ভুল দাবি করেছে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা।
নাসার গবেষকরা বলেন, ভারতে কথিত ‘উল্কাপাতে’র ঘটনায় সৃষ্ট গর্ত দেখে মনে হয় এটি উল্কাপাতে নয় বরং মাটির নিচে থেকে কোনো বিস্ফোরণের সৃষ্টি হয়েছে।
এক ইমেইল-বার্তায় নাসার কর্মকর্তা লিন্ডলে জনসন বলেন, উল্কাপাতের আঘাতে মৃত্যুর ঘটনা তেমন একটা দেখাই যায় না। বৈজ্ঞানিকভাবে এমন খবর কখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
তামিলনাডুর ঘটনাস্থলের কাছের একটি ভবন ও গাড়ির জানালার কাচ ভেঙে যায়। সেখান থেকে ঘন নীল রঙের পাথর উদ্ধারের দাবি করেছে পুলিশ। পাথরের রহস্য মীমাংসায় ‘ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব অ্যাস্ট্রোফিজিকস’ থেকে বিশেষজ্ঞরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পরে পুলিশের কাছ থেকে তাঁরা পাথরের নমুনা সংগ্রহ করেন।
আজ বুধবার ভারতের অনেক বিশেষজ্ঞও ঘটনাটি নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। ভেল্লোরের বেসরকারি প্রকৌশল কলেজের ডিন জি সি অনুপমা গতকাল মঙ্গলবার ফোনে টাইমস অব ইন্ডিয়াকে বলেন, উল্কাপাতের কোনো পূর্বাভাস ছিল না। একই সঙ্গে কেউ উল্কাপাত হতেও দেখেনি। তাই ঘটনাটি উল্কাপাতের কারণে হলে বেশ বিরল বলতে হবে।
এ কথারই যেন সমর্থন করেন নাসার কর্মকর্তা লিন্ডলে জনসন। তিনি জানিয়েছেন, এখনো পর্যন্ত উল্কাপাতে কোনো মৃত্যুর খবরই পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়া যায়নি। আর উল্কাপাতের স্থলে উল্কাপিণ্ড উদ্ধারের ঘটনাও বিরল। এর আগে ১৯০৮ সালে সাইবেরিয়ায় উল্কাপাতে শত মাইল দীর্ঘ এলাকা পুরো বিলীন হয়ে যায়। এ ঘটনায় কয়েকশ হরিণ মারা যায়। দুজন মানুষের মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়। তবে ওই ঘটনার পর পুরো এলাকায় কোনো উল্কাপিণ্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি।