‘বাগদাদি হত্যা অভিযানের ভিডিও’ প্রকাশ করল যুক্তরাষ্ট্র
সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে ইসলামিক স্টেট (আইএস) প্রধান আবু বকর আল-বাগদাদির আস্তানায় চলতি সপ্তাহে অভিযান চালিয়ে তাঁকে হত্যা করার দাবি করছে যুক্তরাষ্ট্র। এবার সেই কথিত সেনা অভিযানের ভিডিও প্রকাশ করেছে মার্কিন কর্তৃপক্ষ।
ঝিরঝিরে ওই ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, বাগদাদির আস্তানায় জঙ্গিদের ওপর গুলি ছুড়তে ছুড়তে মার্কিন সেনারা হেলিকপ্টার থেকে মাটিতে নামছে এবং আস্তানার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
বাগদাদি এ সময় একটি টানেলে ঢুকে বোমা বিস্ফোরণ করে আত্মঘাতী হন বলে যুক্তরাষ্ট্রের দাবি।
ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, অভিযান শেষে বাগদাদির আস্তানাটি বোমা ফাটিয়ে ধ্বংস করে দেওয়া হয়।
মার্কিন কেন্দ্রীয় কমান্ডের প্রধান জেনারেল কেনেথ ম্যাকেঞ্জি জানান, টানেলে ঢুকে দুই সন্তানসহ আত্মঘাতী হন বাগদাদি। যদিও আগে বলা হয়েছিল, তিন সন্তানসহ মারা গেছেন বাগদাদি।
এ ছাড়া মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যেমনটা দাবি করেছিলেন, মারা যাওয়ার আগে ফুঁপিয়ে কাঁদছিলেন বাগদাদি—এমন কোনো কিছু কেনেথ ম্যাকেঞ্জি নিশ্চিত করতে পারেননি।
এক সংবাদ সম্মেলনে কেনেথ ম্যাকেঞ্জি বলেন, ‘দুই শিশুসন্তানসহ হামাগুড়ি দিয়ে একটি গর্তে ঢোকেন বাগদাদি। এর পর বোমা লাগানো পোশাক পরে আত্মঘাতী হন। এ সময় তাঁর লোকজন বাইরেই ছিল। এ থেকেই আপনারা বুঝে নিতে পারেন, ব্যক্তি হিসেবে তিনি কেমন ছিলেন।’
কেনেথ ম্যাকেঞ্জি আরো বলেন, ‘সে কী ধরনের কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিল, সে বিষয়ে এটাই হলো আমার পর্যবেক্ষণ। তাঁর শেষ সময়টা কেমন ছিল, সে বিষয়ে কোনো কিছু নিশ্চিতভাবে বলতে পারছি না। ওই সময় তিনি কী করছিলেন, তা বলতে পারছি না।’
কেনেথ ম্যাকেঞ্জি আরো জানান, বাগদাদির ঘাঁটিতে বোমাসংযুক্ত পোশাক পরে আরো চারজন নারী আত্মঘাতী হন। এ সময় একজন পুরুষও বিস্ফোরণে নিহত হন।
এ ছাড়া হেলিকপ্টার থেকে মার্কিন সেনাদের গুলিবর্ষণে একাধিক জঙ্গি নিহত হয়েছে বলে জানান কেনেথ ম্যাকেঞ্জি। তবে তিনি নিহত জঙ্গির সঠিক সংখ্যা জানাতে পারেননি।
কেনেথ ম্যাকেঞ্জি বলেন, ‘সব ধরনের চেষ্টা করা হয়েছে, যাতে এ হামলায় কোনো বেসামরিক নাগরিক হতাহত না হয়। এ ছাড়া ওই ঘাঁটিতে শিশুরা থাকতে পারে বলে আমরা আগেই সন্দেহ করছিলাম। ওই শিশুদের রক্ষা করার বিষয়টিও আমাদের মাথায় ছিল।’
মার্কিন এই কর্মকর্তা আরো জানান, বাগদাদির ডিএনএ নমুনা তাঁদের কাছে ছিল। ২০০৪ সালে ইরাকি কারাগারে বন্দি থাকার সময় মার্কিন সেনা কর্তৃপক্ষ ওই নমুনা সংগ্রহ করে। ওই নমুনার সঙ্গে মিলিয়েই বাগদাদিকে শনাক্ত করা হয় বলে জানান কেনেথ ম্যাকেঞ্জি।
কেনেথ ম্যাকেঞ্জি জানান, অভিযান শেষে বাগদাদির দেহাবশেষ শনাক্ত করার জন্য একটি অস্থায়ী মার্কিন সেনাঘাঁটিতে নিয়ে যাওয়া হয়। মৃত্যুর ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই বাগদাদির লাশ ‘যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া মেনে’ সাগরে সমাহিত করা হয় বলে জানান এই মার্কিন সেনা কর্মকর্তা।