অভিনব শিক্ষাপদ্ধতি, ভাইরাল ‘ড্যান্সিং স্যার’
বাচ্চাদের পড়া শেখানোর তো কত রকমের পদ্ধতিই থাকে। কিন্তু এবার বাচ্চাদের নাচ ও গানের তালে পড়া শেখানোর এক ব্যতিক্রমী পদ্ধতি সবার মন জয় করে নিয়েছে।
হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এক স্কুলশিক্ষক তাঁর শিক্ষার্থীদের গান ও নাচের মাধ্যমে পড়া শেখাচ্ছেন। অন্তর্জালে রীতিমতো ভাইরাল হয়েছে শিক্ষাদানের সেই ভিডিও। ভারতের ওডিশা রাজ্যের করাপুট জেলার লামতাপুর উচ্চ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ঘটেছে এই ঘটনা।
ভিডিওতে দেখা যায়, দায়িত্বরত প্রধান শিক্ষক প্রফুল্ল কুমার পাঠি গানের তালে তাঁর কোমর দোলাচ্ছেন, শ্রেণিতে ঘুরছেন। এ ছাড়া বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গি করছেন। ভিডিওটির সবচেয়ে মজার দিক হচ্ছে, শিশুরাও তাঁর সঙ্গে তাল মেলাচ্ছিল।
নাচের জন্য করাপুটে বেশ জনপ্রিয় ৫৬ বছর বয়সী পাঠি ২০০৮ সাল থেকে এভাবেই তাঁর ছাত্রদের শিক্ষা দিয়ে আসছেন। লোকমুখে পেয়েছেন ‘ড্যান্সিং স্যার’ খেতাব।
‘আমার মনে হয়েছে, শিক্ষাটা হওয়া দরকার আনন্দ সহযোগে, একঘেঁয়ে যেন না হয়। তাই আমি শিক্ষার পদ্ধতিই বদলে দিলাম। খেয়াল করে দেখলাম, যখন গান ও নাচের মাধ্যমে শিক্ষাদান শুরু করলাম, বাচ্চারা পড়াশোনায় আরো আগ্রহী হয়ে উঠল। স্কুলেও তারা নিয়মিত আসা শুরু করল,’ বলেন প্রফুল্ল।
এ স্কুলশিক্ষক স্কুলে আসার আগে বইয়ের লেখাগুলোকে গানে পরিণত করে নেন এবং তা অনুশীলন করেন।
‘শ্রেণিকক্ষে ঢুকেই শিক্ষার্থীদের শারীরিকভাবে সক্রিয় রাখতে সচেষ্ট হই, তারা যাতে দুপুরের খাবারের পর ঘুমিয়ে না পড়ে, সেদিকেও খেয়াল রাখি। তাদের সঙ্গে নাচার ফলে তারা ঘুমিয়ে পড়ে না,’ বলেন শিক্ষক প্রফুল্ল।
দারুণ একটি ভিডিওটি প্রফুল্ল তাঁর ফেসবুক অ্যাকাউন্টে শেয়ার করেন। এর পরেই নেটিজেনদের একের পর এক প্রতিক্রিয়া আসতে থাকে। একজন লেখেন, ‘হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়া ভিডিও।’ অন্যজন লেখেন, ‘সুন্দর শিক্ষাপদ্ধতি।’
একই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সঞ্জয় পান্ডা জানান, ‘প্রফুল্লর এ পদ্ধতি বিদ্যালয় থেকে ঝরে পড়া শিশুর হার কমিয়েছে। করাপুটের বিদ্যালয়গুলোতে প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করার আগেই ছাত্ররা সাধারণত অনুপস্থিত থাকে কিংবা অকালেই ঝরে পড়ে। কিন্তু এ নতুন পদ্ধতি প্রয়োগের পরে উপস্থিতিতে ইতিবাচকতা দেখা যাচ্ছে।’
ভিডিওটি এরই মধ্যে এক লাখ ২৬ হাজারের বেশিবার দেখা হয়েছে। রয়েছে অসংখ্য প্রশংসাসূচক মন্তব্য।
এই স্কুলশিক্ষকের শিক্ষাদান পদ্ধতি নিয়ে আপনি কী ভাবছেন?