ভিক্ষা করে মন্দির পুনঃপ্রতিষ্ঠা করলেন মুসলিম নারী
ভারতের মধ্যপ্রদেশ রাজ্যের মান্দসৌরের ইন্দ্র কলোনির বাসিন্দা সুঘরা বিবি। ৪৫ বছর বয়সী মুসলমান এই নারী পেশায় একজন সামান্য দিনমজুর।
বাড়ির কাছে প্রাচীন একটি ধ্বংসস্তূপ ঘিরে দীর্ঘদিন ধরে কৌতূহল ছিল সুঘরার। কিন্তু সেখানে ঢুকতে কখনো সাহস হয়নি। বন-জঙ্গলে ঘেরা ওই ধ্বংসস্তূপে এলাকার কোনো মানুষ কোনো দিন পা রাখত না। ফলে ঝড়-বৃষ্টিতে ক্রমে ভগ্নদশায় পরিণত হয়ে যাচ্ছিল এটি। চোখের ওপর একটা প্রাচীন ধ্বংসস্তূপ শেষ হয়ে যাচ্ছে দেখে একদিন সাহস করে সেখানে ঢোকেন সুঘরা বিবি। ভগ্নাবশেষের মধ্যে দেখতে পান, প্রাচীন একটি মন্দির।
ওই মন্দির রক্ষণাবেক্ষণে স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের কোনো আগ্রহই ছিল না। বিষয়টি তাঁর পরিচিত হিন্দুদের জানিয়েও সেই অর্থে ফল পাননি তিনি। ফলে নিজেই স্থির করলেন, যেভাবেই হোক ওই মন্দির পুনঃপ্রতিষ্ঠা করবেন।
কিন্তু ওই মন্দির সংস্কার করতে গেলে যে অর্থের প্রয়োজন, তা সুঘরার একার পক্ষে জোগাড় করা কোনোভাবেই সম্ভব ছিল না। বাধ্য হয়ে ইন্দ্র কলোনির বাসিন্দাদের কাছে গিয়ে হাত পাতলেন তিনি। শুরু করে দিলেন রীতিমতো ভিক্ষা করা।
যিনি নিজের জীবনধারণের জন্য কখনো ভিক্ষাবৃত্তি করেননি, তিনি স্রেফ হিন্দুদের মন্দির রক্ষা করার তাগিদেই হাতে তুলে নিলেন ভিক্ষার ঝুলি। এর পর সেই ভিক্ষার অর্থ দিয়ে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা হলো মন্দির।
বর্তমানে মন্দিরটিতে ধুমধাম করে পালিত হয় নবরাত্রি উৎসব। এ উৎসবে হিন্দু-মুসলমান উভয় সম্প্রদায়ের মানুষ যোগ দেন। আবার এ মন্দিরেই মুসলমানদের পক্ষ থেকে শরবত বিতরণ করা হয় সাধারণ মানুষের মধ্যে।
মন্দিরটিতে রোজ সন্ধ্যায় পূজার থালা নিয়ে আরতিতে যোগ দেন স্থানীয় মুসলমান নারীরাও। ইন্দ্র কলোনির হিন্দু-মুসলমানরা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দেখভাল করছেন মন্দিরটি।