ভারতে হিংস্র পর্নোগ্রাফি দেখার প্রবণতা বাড়ছে
ভারতীয় পুরুষদের মধ্যে শুধুমাত্র পর্নোগ্রাফি নয়, হিংস্র পর্নোগ্রাফি দেখার প্রবণতা বাড়ছে। এমনটাই জানিয়েছে ভারতের সেন্ট্রাল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (সিবিআই)। সেই সঙ্গে সাইবার স্পেসে ভারতের দাম্ভিক পুরুষ জনসংখ্যার এই ধরনের হিংস্র আচরণ বন্ধ করা বেশ কঠিন বলেও মনে করে সিবিআই।
গত বৃহস্পতিবার ভারতের সুপ্রিম কোর্টে এই বিষয়ে একটি হলফনামা জমা দিয়েছে সিবিআই। সেই হলফনামায় বলা হয়, ভারতীয় পুরুষদের অতৃপ্ত লালসা ও কামোত্তেজক সামগ্রীর প্রতি আসক্তি ও নারীর প্রতি সহিংস আচরণ ক্রমেই বাড়ছে।
সেই সঙ্গে বাড়ছে হিংস্র পর্নোগ্রাফি দেখার প্রবণতা। ফলে হিংসাত্মক ও নির্যাতনমুখী পর্নোগ্রাফি দেখার দিকে ক্রমশ ঝুঁকছে ভারতীয় পুরুষদের একটা বড় অংশ।
নিজেদের অতৃপ্ত যৌনাকাঙ্ক্ষা থেকেই এ ধরনের পর্নো দেখার চাহিদা বাড়ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। সেই সঙ্গে দেশে নগর উন্নয়ন এবং যথেচ্ছ ইন্টারনেটের ব্যবহারের সুবিধার কারণে এই প্রবণতা বাড়ছে বলেও মনে করেন তাঁরা।
ভারতে ধর্ষণ ও গণধর্ষণের মতো অপরাধের হার ক্রমেই বাড়ছে। এমনকি দেশটির রাজধানী দিল্লিসহ বিভিন্ন রাজ্যশহরে গাড়ির ভেতর, বিভিন্ন দেশ থেকে আসা বিদেশি পর্যটক, প্রকাশ্য ফুটপাথে ভিখারিণীকেও ধর্ষণ করতে ছাড়ছে না এক শ্রেণির বিকৃতকাম পুরুষ।
বর্তমানে শুধু এই ধরনের অপরাধ করেই ক্ষান্ত হচ্ছে না অপরাধীরা। বহু ক্ষেত্রে এই ধরনের ঘৃন্য অপরাধ করার পর তার ভিডিও তৈরি করছে। এরপর ইন্টারনেটের মাধ্যমে তা সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দিচ্ছে। এই ধরনের ভিডিও পরোক্ষভাবে অন্য পুরুষদের অপরাধ করতে উৎসাহিত করছে। যার ফলে শুধু নিগ্রহের শিকার নারীরা নন, তার সঙ্গে সমাজের সব নারী ও শিশুদের নিরাপত্তাও বিপন্ন হচ্ছে।
এর আগে ভারতীয় সাইবার স্পেসে হিংস্র পর্নোগ্রাফির বিরোধিতা করে একটি রিট দায়ের করেছিল প্রজ্বলা নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। যার জবাবে বৃহস্পতিবার আদালতে এই হলফনামা জমা দেয় সিবিআই।
ভারতের শিশু ও নারীদের নিরাপত্তার স্বার্থে সাইবার ক্রাইম রোধে পুলিশ প্রশাসনের হাতে আরো ক্ষমতা দেওয়ার দাবি জানিয়েছে সিবিআই। এমনকি সুপ্রিম কোর্টে সাইবার সেক্স সংক্রান্ত অপরাধের তদন্ত এবং অপরাধীদের বিরুদ্ধে মামলার জন্য সিবিআইকে জাতীয় এজেন্সির স্বীকৃতি দেওয়ারও আবেদন জানিয়েছে তারা।
সিবিআই কর্তৃপক্ষের দাবি, এই ধরনের অপরাধ মোকাবিলা করার জন্য সর্বোচ্চ পর্যায়ের দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা রয়েছে তাদের। যারা এই ধরনের অপরাধ সংগঠিত করে তাদের পক্ষে সেই সমস্ত অপরাধীদের শনাক্ত করা মোটেও কঠিন হবে না বলেও জানিয়েছে তারা।