ভারতে ‘গজ’র আঘাতে নিহতের সংখ্যা ৩০
দক্ষিণ ভারতের তামিলনাড়ুতে ঘূর্ণিঝড় ‘গজ’র আঘাতে এ পর্যন্ত ৩০ জন নিহতের খবর পাওয়া গেছে। এই সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট এই ঘূর্ণিঝড় দক্ষিণ ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্যের উপকূলবর্তী এলাকায় আঘাত হানে। আজ শনিবার সরকারিভাবে এই তথ্য পাওয়া যায়।
এ ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সবচাইতে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উপকূলবর্তী নাগাপট্টিনাম এবং কাড্ডালোর জেলা। এ ছাড়া তিরুভারুর এবং তাঞ্জাভুড় জেলাসহ ছয়টি জেলাতেও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
এদিকে, দিল্লির আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, তামিলনাড়ুর ভিতরের জেলাগুলোতে প্রবেশের পর ‘গজ’ ধীরে ধীরে শক্তি হারিয়ে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। আগামী ছয় ঘণ্টায় সেটি আরো পশ্চিমে সরে গিয়ে দুর্বল হয়ে সাধারণ নিম্নচাপে পরিণত হবে। তবে তামিলনাড়ুর পাশাপাশি কেরালা এবং লাক্ষাদ্বীপে আগামী ২৪ ঘণ্টায় বিক্ষিপ্তভাবে ভারি ও অতিভারি বৃষ্টিপাত এবং ঘণ্টায় ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার বেগে হাওয়া বইতে পারে।
তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী পলানিস্বামী এরই মধ্যে কথা বলেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে। ‘গজ’র প্রভাব একটু কমায় ত্রাণ সামগ্রী বিলির কাজ শুরু হয়েছে। প্রায় নয় হাজার উদ্ধারকর্মী উদ্ধারকাজ করছেন।
পাশাপাশি ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে নিহত ও আহতদের আর্থিক সহযোগিতার কথা ঘোষণা করেছেন তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী পলানিস্বামী। ঘূর্ণিঝড়ে নিহতদের পরিবারকে এককালীন ১০ লাখ রুপি, গুরুতর আহতদের এক লাখ রুপি এবং অল্প আহতদের ২৫ হাজার রুপি আর্থিক সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
‘গজ’র আঘাতে দক্ষিণ ভারতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ভেঙে গেছে হাজারো কাঁচাবাড়ি। ভেঙে পড়েছে বিদ্যুতের খুঁটি, বড় বড় গাছ। ঝড়ের দাপটে তামিলনাড়ুর ছয় জেলায় উপড়ে গেছে কমপক্ষে ১৩ হাজার বিদ্যুতের খুঁটি। ফলে বিদ্যুৎ সেবা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে হাজারো গ্রাম। ঝড় এবং বৃষ্টির ফলে ভেসে গেছে মাঠের ফসল।
পরিস্থিতি মোকাবিলায় তামিলনাড়ুর কুড্ডালোর, নাগাপট্টিনাম, পুডুকোট্টাই, তাঞ্জাভুর, রামনাথপুরম ও তিরুভারুর জেলায় ৪৭৭টি ত্রাণ শিবির তৈরি রাখা হয়েছে। রাজ্যটির প্রায় ৮৩ হাজার মানুষ এখনো বিভিন্ন ত্রাণ শিবিরে অবস্থান করছে।
‘গজ’ বিধ্বস্ত সব এলাকার সব স্কুল-কলেজ বন্ধ রাখা হয়েছে । সমুদ্রে মাছ ধরতে যাওয়ার ক্ষেত্রে জারি করা হয়েছে নিষেধাজ্ঞা। আর মোবাইল পরিসেবা চালু রাখতে সেলফোন অপারেটরদের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ শুরু করেছে প্রশাসন।
এদিকে, ঘূর্ণিঝড়ের কারণে চারটি ট্রেন চলাচল বাতিল করা হয়েছে। চারটি এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রাপথ পরিবর্তন করা হয়েছে। রামেশ্বরগামী ট্রেনগুলোর যাত্রাপথ কমিয়ে মানামাদুরাই পর্যন্ত করা হয়েছে।