পাখিরা এখানে সত্যিই মানুষের মতো মাতাল হচ্ছে! কেন জানেন?

মদ বা কোনো নেশাদ্রব্য খেয়ে মানুষ না হয় মাতলামি করল, তাও মানা যায়। তাই বলে পাখিরা মাতলামি করবে! হ্যাঁ, যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যের গিলবার্ট শহরজুড়ে আক্ষরিক অর্থেই মাতলামি করে উড়ে বেড়াচ্ছে শত শত পাখি।
রবিন, সিডার ওয়াক্সউইংসসহ নানা প্রজাতির স্থানীয় পাখি রীতিমতো মাতাল হয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাড়ির জানালা, গাছসহ বিভিন্ন জায়গায় ধাক্কা খেয়ে বেড়াচ্ছে।
গতকাল শুক্রবার সিএনএনে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে এ কথা জানা যায়। তবে পুলিশ বলছে, চিন্তার কিছু নেই, পাখিগুলো কিছুটা মাতাল!
চলতি সপ্তাহে গিলবার্টের পুলিশ প্রধান টি টেকার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এক পোস্টে লিখেছেন, ‘অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, কিছু পাখি স্বাভাবিকের চেয়ে একটু মাতাল।’
কিন্তু ঘটনা কী? পাখিগুলো কি মদ খেয়ে এমন মাতলামি করছে? পাখিরা কী মদ খায়?
উত্তরে জানা গেছে- না, মদ খেয়ে এমন মাতলামি করছে না পাখিগুলো। পুলিশ প্রধানের দাবি, যথাসময়ের আগে মৌসুমি তুষারপাত হওয়ায় এবারে গাছভর্তি জামগুলো অকালে পেকেছে। সেই জাম খেয়েই পাখিদের ওই দশা।
‘এ বছর অনেক পাখিই দক্ষিণে অভিবাসন করেনি। ফলে এ পরিস্থিতি আরো বেশি করে চোখে পড়ছে। বয়স্ক পাখিরা পেরে উঠলেও, তুলনামূলক অল্পবয়সী পাখিরা (অকালপক্ব জামের) রাসায়নিক বিক্রিয়া সামলে উঠতে পারছে না’, বলেন টি টেকার।
কিন্তু আসলেই কী ব্যাপারটি এমন? জাম খেয়েই কি মাতাল হচ্ছে ওইসব পাখি?
ইউনিভার্সিটি অব উইস্কনসিনের বন ও বন্যপ্রাণী বাস্তুসংস্থান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক (পাখির নামে যার নাম) অ্যানা পিজন জানাচ্ছেন, হ্যাঁ, এমনটি হতে পারে। এমন ঘটনা বিরল নয়।
অ্যানা পিজন বলেন, বিশেষ করে শীতের শেষদিকে বসন্তের শুরুতে এমনটি ঘটে। জামে থাকে রাসায়নিক পদার্থ ইস্ট। এটা জাম পাকাতে সাহায্য করে। রবিন, ওয়াক্সউইং এসব পাখি খাবারের জন্য মূলত ফলমূলের ওপর নির্ভরশীল। আর সে কারণে এদের মাতাল হওয়ার হারও বেশি।
এভাবে মাতাল হওয়া পাখিদের জন্য বিপজ্জনক বলে জানান পিজন। তিনি আরো বলেন, ‘এতে তারা আত্মনিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। হারিয়ে ফেলে শিকার বা বিপদ থেকে নিজেকে উদ্ধার করার ক্ষমতা। এমনকি ওড়ার দক্ষতাও লোপ পায় তাদের।’
তবে, অন্যসব কারণে পাখির মৃত্যুর হারের চেয়ে, অ্যালকোহলে মৃত্যুর ঝুঁকি কম। এটি স্বল্প সময় স্থায়ী থাকে বলে জানান পিজন।
গিলবার্ট শহরের ওই মাতাল পাখিদের নিয়েও দুশ্চিন্তা করতে নিষেধ করেছেন পুলিশ প্রধান টি টেকার। তিনি বলেন, উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। পাখিরা এ মাতলামি দ্রুতই হজম করে ফেলবে।
মজা করে টিকার বলেন, ‘এই পাখিদের জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ডাকার দরকার নেই। খুব শিগগিরিই এরা (মাতলামি ছেড়ে) ধোপদুরস্ত ভদ্র-স্বভাবের হয়ে উঠবে।’