৯৫ বছরের অন্ধ বৃদ্ধা কী দারুণ ছবি আঁকেন!
মার্গারেট ম্যাকনেইল। বয়স ৯৫। অন্ধ। কিন্তু ছবি এঁকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন এ ব্রিটিশ নারী। এত প্রতিবন্ধকতা তাঁর সৃজনশীলতাকে দমাতে পারেনি। তাঁর অঙ্কন ও চিত্র অসাধারণ। বর্ণিল। এককথায় অত্যাশ্চর্য। নিজের আঁকা প্রায় সাড়ে তিনশ চিত্রকর্ম এখন তাঁর সংগ্রহে।
মার্গারেটের এক চোখ পুরোপুরি অন্ধ। আরেক চোখ দিয়ে খুব সামান্যই দেখতে পান। এত ক্ষীণ দৃষ্টি যে ডাক্তারের নিবন্ধন খাতায় তাঁকে অন্ধ হিসেবেই লেখা হয়। স্পর্শের অনুভূতি ও স্মৃতি থেকে তিনি আঁকেন অসাধারণ চিত্রগুলো।
১৯৯৪ সালে যখন স্বামী জর্জ মারা যান, তখন থেকে তিনি আর্ট ক্লাসে যাওয়া শুরু করেন। শিক্ষক ডানকান ব্রাউন তাঁকে চিত্রশিল্পে আগ্রহী করে তোলেন, যদিও তখন থেকে তাঁর দৃষ্টিশক্তি ধীরে ধীরে কমছিল।
মার্গারেট বলেন, ‘আমি সবসময় আঁকাআঁকির ভেতরেই থাকতাম। সৈকত থেকে পাথর কুড়িয়ে তার ওপর আঁকতাম। সেগুলো মানুষকে দিতাম, যাতে তাঁরা দরজায় ব্যবহার করতে পারেন।’
৭১ বছর বয়সে মার্গারেট নাচের ক্লাসে যেতেন। নাচ ভালো লাগত তাঁর। সেখানে অনেকেই তাঁকে স্থানীয় অঙ্কনশিল্পী ও শিক্ষক ডানকান ব্রাউনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। তিনি ডানকানের সঙ্গে দেখা করেন। ধীরে ধীরে তাদের বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে।
‘বাম চোখ দিয়ে তখন একেবারেই দেখতাম না। ডানকানকে বললাম, আর্ট ক্লাসে যাওয়া বন্ধ করা দরকার। কিন্তু তিনি আমাকে ক্লাস ছাড়তে বারণ করলেন। আমার সব ছবিই স্মৃতি থেকে আঁকা। যা চাই তা পারি না সত্যি, তবে চেষ্টা করি’, বলেন এ বৃদ্ধা।
তাঁর আঁকা প্রাণী, পাখি ও ল্যান্ডস্কেপ সত্যিই দক্ষতাপূর্ণ ও হৃদয়গ্রাহী। চিত্রকর্মগুলো দেখলে, কেউ ভাবতেই পারবেন না শিল্পীর এক চোখ পুরোপুরি অন্ধ, আরেক চোখ দিয়ে খুব সামান্যই দেখেন।
মার্গারেট দুই সন্তানের মা এবং তাঁর তিনজন নাতি-নাতনি আছে। এখনও তিনি সক্রিয় জীবনযাপন করেন। রান্নাবান্না পারেন, পুলিশ স্টেশন বা দাঁতের ডাক্তারের কাছে একাই যেতে পারেন।
বিস্ময়কর ব্যাপার হলো, তুর্কি শিল্পী এশরেফ আরমাগানও অন্ধ হয়ে জন্মেছিলেন। কিন্তু তিনি অঙ্কন ও লেখা শেখেন। শৈশবেই তাঁর বাবার কাছ থেকে রঙের ব্যবহার শিখেছিলেন। যাহোক, দৃষ্টি থাক বা না থাক, কোনো কিছুই সৃজনশীলতাকে আটকাতে পারে না। মার্গারেটকেও পারেনি। সূত্র মেট্রো ডটকম।