ইয়েমেন যুদ্ধে সৌদিকে সহায়তায় গোপনে মার্কিন সেনা মোতায়েন
হুতি বিদ্রোহীদের দমন করতে গত বছরের ডিসেম্বরে সৌদি আরব ও ইয়েমেন সীমান্তে গোপনে সেনাদল মোতায়েন করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। গতকাল বৃহস্পতিবার সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনসহ ইউরোপ ও আরব অঞ্চলের কূটনীতিকরাও এর সত্যতা স্বীকার করেছেন।
সংবাদমাধ্যমটিতে জানানো হয়, তিন বছর আগে ইয়েমেনে যখন সংঘাত শুরু হয়, হুতি বিদ্রোহী গোষ্ঠীরা বিভিন্ন সময় সৌদি আরবের রিয়াদসহ অন্য শহরগুলোতে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করতে শুরু করে। সৌদিও কয়েকবার বিমান হামলার মাধ্যমে এই হামলার জবাব দেয়।
ওই সময় সৌদি প্রিন্স মুহাম্মদ বিন সালমান নতুন করে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা চাইলে এ ব্যবস্থা নেয় যুক্তরাষ্ট্র। এর কয়েক সপ্তাহ পরেই যুক্তরাষ্ট্র সীমান্ত অঞ্চলে ১২ জন সেনাসদস্য মোতায়েন করে।
কূটনীতিকদের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যমটি জানায়, হুতি বিদ্রোহীদের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ও ঘাঁটি খুঁজে বের করে ধ্বংস করতে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাদল কাজ করছে। সেইসঙ্গে ইয়েমেন সীমান্তে হুতি বিদ্রোহীদের প্রতিহত করতে সৌদি আরবের সেনাবাহিনীকে প্রশিক্ষণও দিচ্ছে গ্রিন বিরেট নামে ওই সেনাদল।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, এই সেনা মোতায়েনের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রকে হুতি বিদ্রোহীরা সরাসরি কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি। এর আগে পেন্টাগন বলেছিল, সীমান্তে সংঘর্ষ কমানো এবং সৌদি ও হুতি বাহিনীর মধ্যস্থতা করতেই এই সেনা মোতায়েন করা হয়েছে।
নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘এই গোপন অভিযানের অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের এই সেনারা সীমান্ত অতিক্রম করে ইয়েমেনে প্রবেশ করেছে কি না, তা জানা যায়নি।’
তবে পেন্টাগনের মুখপাত্র মেজর আদ্রিয়ান র্যানকিন গোলোয়ে বলেন, ‘সেনাদলকে কোনো গোপন অভিযানের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়নি। তাদের কাজ হলো বেসামরিক কাজে সহায়তা করা।’
ওই অঞ্চলের দরিদ্র দেশ ইয়েমেনে ২০১৪ সালে এই যুদ্ধ শুরু হয়, যখন হুতি বিদ্রোহীরা সানা অঞ্চল দখল করে নেয়। যুদ্ধে ভেঙে পড়ে ইয়েমেনের অবকাঠামো। এর পর থেকে সানাসহ সৌদি আরবের সীমান্তবর্তী দেশের উত্তরাঞ্চলের বেশ কিছু অঞ্চল শাসন করছে হুতিরা। লড়াইয়ে একদিকে রয়েছে দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট আলি আবদুল্লাহ সালেহের অনুগত হুতি বিদ্রোহীরা। অন্যদিকে রয়েছে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের সেনাবাহিনী।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরবের দাবি, হুতিদের এই অস্ত্র সরবরাহ করছে ইরান।
এখন পর্যন্ত এই বিমান হামলায় কমপক্ষে ১০ হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছে ৪০ হাজারের বেশি। এ ছাড়া গৃহহীন হন ৩০ লাখের বেশি মানুষ। এ ছাড়া এর ফলে অনেক মানুষ কলেরায় আক্রান্ত হয়। দুর্ভিক্ষ ও অপুষ্টির কবলে পড়েছে অনেক মানুষ।