সৌদি ফ্যাশন জগতে নতুন মুখ রাজকন্যা নওরা
অতিমাত্রায় রক্ষণশীল সৌদি আরবের সামাজিক-রাজনৈতিক অঙ্গনে এক ধরনের নাটকীয় পরিবর্তন এসেছে। এতে নারীরা তাঁদের পোশাক-পরিচ্ছদসহ সামগ্রিক জীবনযাপনে আরো স্বাধীন হতে পারছেন।
তাই গত ১১ এপ্রিল সৌদি আরবে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল প্রথমবারের মতো ‘আরব ফ্যাশন উইক’। এই ফ্যাশন অনুষ্ঠানে নতুন নতুন মুখের দেখা মিলেছে।
সৌদি আরবের ফ্যাশন জগতে তেমনই এক নতুন মুখ সৌদি রাজকন্যা নওরা বিনতে ফয়সাল আল সাউদ। এই ডিসেম্বরেই তাঁকে আরব ফ্যাশন কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করা হয়।
গত রোববার নওরা বিনতে ফয়সালের ৩০ বছর পূর্ণ হয়। আর এই মাসেই দেখা যায় তাঁর দেশের প্রথম ফ্যাশন সপ্তাহ।
মাথায় স্কার্ফ টানা, বাকপটু ও সুন্দরী নওরাকে তাঁর ভক্তরা সৌদি আরবের ভবিষ্যৎ হিসেবে অভ্যর্থনা জানাচ্ছেন। তবে অন্যদিকে, সমালোচকেরা রক্ষণশীল দেশ হিসেবে তাঁকে প্রত্যাখ্যান করছেন।
এই রাজকন্যা সংবাদমাধ্যম এএফপিকে বলেন, 'অবশ্যই আমি মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি বুঝতে পারি। সৌদি আরবের সংস্কৃতি খুব কঠিন। একজন সৌদি নারী হিসেবে আমি সৌদি সংস্কৃতিকে, আমার ধর্মকে সম্মান করি।’
নওরা বিনতে ফয়সাল আরো বলেন, ‘আমরা যেভাবে পোশাক-পরিচ্ছেদ পরি, আপনারা যদি সেটাকে রক্ষণশীলতা বলেন, তাহলে এটা আমাদের জীবনেরই একটা অংশ, আমাদের সংস্কৃতির অংশ। এমনই আমাদের জীবন, এমনকি ভ্রমণের সময়েও।’
মুহাম্মদ বিন সালমান সৌদি রাজপুত্র হওয়ার পর তাঁর নেতৃত্বে দেশটিতে খুব দ্রুত কিছু নীতিগত পরিবর্তন হচ্ছে। এখন থেকে রাজ্যে গাড়িও চালাতে পারবেন সৌদি নারীরা। নারীদের জন্য বোরকাও আবশ্যক থাকবে না বলেও আভাস দিয়েছেন এই রাজপুত্র।
নওরা বলেন, ‘এটা শুধু নারীদের অনুষ্ঠান ছিল। কিছু নারী অনুষ্ঠানে এসেছিল। আমি বলতে চাই, সবাই নিরাপদবোধ করেছেন। আমি ফ্যাশন শো দেখতে আসব, কোনো ধরনের চিন্তা ছাড়াই যে কেউ আমার ছবি তুলছে। আমি এটা উপভোগ করতে চাই।’
অনুষ্ঠানের ছবিগুলো ফ্যাশন কাউন্সিলের ফটোগ্রাফাররা তুলেছেন। সৌদি আরবের বিনোদন কর্তৃপক্ষের অনুমোদনের পর তা প্রকাশিত হয়।
নওরার ফ্যাশন ভাবনায় জাপানের প্রভাব খুব বেশি। তিনি বলেন, ‘সেখান থেকেই আসলে ফ্যাশনের প্রতি ভালোবাসাটা শুরু হয়। তাই আমার মনে হয়, আমি জাপানের অনেক কিছুই সৌদিতে নিয়ে এসেছি। অন্যদের সম্মান, অন্যদের সংস্কৃতির প্রতি সম্মান আর ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধা।’
এশিয়ায় সাংস্কৃতিক প্রভাব রিয়াদেও স্পষ্ট। যার কারণে ফ্যাশনপ্রিয় অল্প বয়সীদের মধ্যে বোরকা ও হিজাবের খ্যাতি দিন দিন বাড়ছে।
নওরা তাঁর দেশে বস্ত্র উৎপাদন শিল্পও শুরু করতে চান, যাতে দেশে তেলের ওপর নির্ভরশীলতা কমে। তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, আমরা বড় কিছুই করতে পারব।’