মা ও বন্ধুকে খুন করে ফেসবুকে স্বীকারোক্তি
‘আমি দুজনকে গুলি করেছি এবং নিজে আত্নহত্যা করতে যাচ্ছি,’ এভাবেই নিজের অপরাধের কথা ফোন করে জানান কেসি জেমস লহন নামের ২৩ বছর বয়সী এক যুবক।
গত রোববার সকালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের টেনেসি অঙ্গরাজ্যের ওই যুবক দেশটির জরুরি সেবায় নিয়োজিত একটি টেলিফোন নম্বরে (৯১১) কল করে এসব কথা জানান। তাঁর দেওয়া ঠিকানায় গিয়ে পুলিশ একজন যুবক ও মহিলার গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করে। কিন্তু সেখানে ফোন করে জানানো ওই ব্যক্তিকে পাওয়া যায়নি।
পরে পুলিশ জানতে পারে, কেসি নামের ওই যুবক তাঁর মা আর বন্ধুকে খুন করেছে। তবে খুনের কারণ এখনো অজানা। পুলিশ ধারণা করেছিল, ফোন করার পর কেসি আত্নহত্যা করেছেন।
টেনেসির ইস্ট রিজের সহকারী পুলিশ প্রধান স্টেন এলেন জানান, এ ঘটনার কিছুক্ষণ পর কেসি আবার ওই নাম্বারে কল করেন এবং বলেন, তিনি আত্নহত্যা করার জন্য দেশটির উত্তরাঞ্চলের প্রত্যন্ত এলাকায় যাচ্ছেন। কিন্তু তিনি ওই দিকে না গিয়ে উল্টো দিকে যেতে থাকেন।
কর্তৃপক্ষ জানায়, ৯১১ নম্বরে কল করার পর কেসি টেনেসির সীমান্তবর্তী দক্ষিণাঞ্চলে যেতে থাকেন। তিনি প্রায় ৩০০ মাইল গাড়ি চালিয়ে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় আলাবামা অতিক্রম করে মিসিসিপিতে যান।
এদিকে কয়েক ঘণ্টা গাড়ি চালানোর পর কেসি এক ফেসবুক পোস্টে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা স্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘আমি এখন মিসিসিপিতে আছি এবং আমার গাড়ি নষ্ট হয়ে গেছে। খুনের বিষয়ে আমি অনেক ভেবেছি, কিন্তু তা আমার মনে তেমন কোনো অনুভূতির সৃষ্টি করতে পারেনি। ফেসবুকের মাধ্যমে অনেকেই আমার কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করছে। তবে আমি বলতে চাই, আমি যা করেছি তার দায় সম্পূর্ণ আমার। আমার সিদ্ধান্ত ও ব্যর্থতা শুধুই আমার।’
হত্যার ঘটনা স্বীকার করে কেসি জানান, গুলি করার পর পরই বন্ধু এভরি গেইন মারা যান। তখন তাঁর বন্ধু ঘুমন্ত অবস্থায় ছিলেন। এরপর মার রুমে গিয়ে তাঁকে গুলি করার চেষ্টা করেন। এ সময় তাঁর মা চিৎকার করতে থাকেন। কেসি লিখেন, তিনি তাঁর মাকে ততক্ষণ গুলি করেন যতক্ষণ না তাঁর মৃত্যু হয়। তবে কেসি তাঁর পোষা কুকুর ও বিড়ালকে হত্যা করেননি বলে জানান।
কেসি তাঁর ফেসবুক বন্ধুদের উদ্দেশে বলেন, চিন্তা-ভাবনা ও প্রার্থনা করার মানে হলো সময়ের অপচয়।
তবে কেসি তাঁর অপরাধের জন্য কারো কাছে ক্ষমা চান না। তিনি লিখেন, ‘এটা ক্ষমার অযোগ্য।’
পুলিশ জানায়, কেসি ও তাঁর মা আগে কোনো অপরাধের সাথে জড়িত কি না, সে সম্পর্কে তারা নিশ্চিত নয়। পুলিশ তাঁর গাড়ি খুঁজে পেয়েছে, কিন্তু তাঁকে পাওয়া যায়নি। পুলিশের ধারণা, তিনি এখনো একই এলাকায় অবস্থান করছেন। তবে কেসি তাঁর ফেসবুক থেকে ওই পোস্টটি ডিলিট করে দিয়েছেন।