ভারতের সব কারাগারে সিসি ক্যামেরা লাগানোর নির্দেশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট। শুক্রবার ভারতের সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি টি এস ঠাকুরের ডিভিশন বেঞ্চ এই রায় দেন। 

সুপ্রিম কোর্টের রায়ে বলা হয়, ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের কারাগারে বন্দিদের মানবাধিকার একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। একে গুরুত্ব দিয়ে দেশের সব কারাগারে সিসি ক্যামেরা লাগানো প্রয়োজন। এতে বন্দিরা কী অবস্থার মধ্যে সময় কাটাচ্ছেন তা সম্পর্কে বিশদ জানতে পারবে কর্তৃপক্ষ।

ভারতে কারাগারে বন্দি প্রত্যেক অভিযুক্তেরই মানবাধিকারের অধিকার রয়েছে। কেউ মানবাধিকারের বাইরে নয়। শুক্রবার এই মতের পক্ষেই কার্যত সায় দিয়েছেন ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। দেশের প্রতিটি কারাগারে বন্দিদের ওপর নজরদারি বাধ্যতামূলক। সেই সঙ্গে প্রতিটি জেলের ভেতর কড়া নজরদারির জন্য সিসি ক্যামেরা লাগাতে হবে।

একই সঙ্গে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে মানবাধিকার কমিশন গঠন করারও নির্দেশ দিয়েছেন শীর্ষ আদালত। কোথাও যাতে মানবাধিকার লঙ্ঘিত না হয় মূলত সেই বিষয়ের ওপর এবার থেকে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট নজর রাখতে চলেছেন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞ মহল।  

ভারতের হিমাচল প্রদেশ, মেঘালয়, নাগাল্যান্ড, অরুণাচল প্রদেশ, দিল্লির মতো বহু রাজ্যে এখনো মানবাধিকার কমিশন নেই। ফলে সেই সমস্ত রাজ্যের কারাগারে সিসি ক্যামেরা লাগানোর মাধ্যমে বন্দিদের সুরক্ষা আরো সুনিশ্চিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর আগে ভারতের বিভিন্ন কারাগারে বন্দি নিপীড়নের অভিযোগ উঠেছে। কোথাও দাগি দুষ্কৃতকারী কারাগারের মধ্যেই অপেক্ষাকৃত দুর্বল দুষ্কৃতকারীদের ওপর অকথ্য নির্যাতন চালায় বলেও অভিযোগ আছে। আর তা দূর করতে সুপ্রিম কোর্টের এই সিদ্ধান্ত মানবিকতার এক উজ্জ্বল নির্দশন হতে চলেছে বলেও মনে করছে দেশটির একাধিক মানবাধিকার সংগঠন।

এই বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গের সর্বভারতীয় মানবাধিকার সংগঠন ‘অ্যামনেস্টি ইন্ডিয়া’র কর্ণধার সুধান্ত সরকার বলেন, ভারতীয় কারাগারগুলোতে কমবেশি বন্দি নির্যাতন চলে; যা আমরা অধিকাংশ ক্ষেত্রে জানতে পারি না। কারাগারে এই ধরনের বন্দি নির্যাতন চূড়ান্তভাবে মানবাধিকারবিরোধী। আজ সুপ্রিম কোর্টের এই রায় আগামী দিনে দেশের মানবাধিকার সংগঠনগুলো অনুসরণ করে সবাইকে নিয়ে মানবিকতার পক্ষে এগিয়ে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।