নারীরা সংখ্যায় ২%, আত্মহত্যায় ৪২%
ভারতের কেন্দ্রীয় আধা সামরিক বাহিনীতে ২ শতাংশের কম নারী কর্মকর্তা নিয়োজিত রয়েছেন। কিন্তু এ বাহিনীতে আত্মহত্যাকারীর প্রায় ৪২ শতাংশই নারী! দেশটির জাতীয় ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরো (এনসিআরবি) ও ব্যুরো অব পুলিশ রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (বিপিআরডি) গবেষণা তথ্যে এ চিত্র উঠে এসেছে।
২০১৪ সালে দুর্ঘটনায় মৃত্যু ও আত্মহত্যার ঘটনার ওপর এনসিআরবির তথ্যে দেখা গেছে, বিএসএফ, সিআরপিএফ, সিআইএসএফ ও অন্যান্য আধা সামরিক সংগঠনসহ কেন্দ্রীয় সশস্ত্র বাহিনীর ১৭৫ জন আত্মহত্যা করেছেন। এর মধ্যে ৭৩ জন, অর্থাৎ ৪১ দশমিক ৭ শতাংশ নারী।
বিপিআরডির দেওয়া তথ্যানুযায়ী, এই বাহিনীগুলোতে নয় লাখ ৩০ হাজার লোক নিয়োজিত। এর মধ্যে নারী মাত্র ১৮ হাজার। আধা সামরিক বাহিনীতে প্রতি লাখে প্রায় ৩৯৭ নারী আত্মহত্যা করেছেন। অন্যদিকে, পুরুষ আত্মহত্যা করেছেন প্রায় ১১ জন। এই তথ্য এটিই স্পষ্ট করে যে, বাহিনীগুলোতে পুরুষের চেয়ে নারীরা অনেক চাপের মধ্যে থাকেন।
আধা সামরিক বাহিনীতে পুরুষের আত্মহত্যার হার সাধারণ জনগোষ্ঠীর মধ্যে আত্মহত্যার হারের চেয়েও কম। সাধারণ জনগোষ্ঠীর মধ্যে প্রতি লাখে ১৩ দশমিক ৯ জন আত্মহত্যা করেছেন। এ ক্ষেত্রেও নারী সদস্যের আত্মহত্যার হার অবশ্যই বেশি।
প্রকাশিত তথ্যে নারী কর্মকর্তাদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণের চিত্রও উঠে এসেছে। নারী কর্মকর্তাদের কোনো যুদ্ধক্ষেত্রে মোতায়েন করা হয় না। সিআরপিএফ একটি পরীক্ষামূলক প্রকল্প হিসেবে ছত্তিশগড়ে নারী কর্মকর্তাদের প্রথম দলকে পাঠিয়েছে। কিন্তু তাদের অভিযানে পাঠানো হবে না। এ পরিস্থিতিতে আত্মহত্যার কারণ হিসেবে কাজের চাপকে দায়ী করা যাবে না।
এনসিআরবির দেওয়া তথ্যানুযায়ী, আধা সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তাদের আত্মহত্যার একটি বড় কারণ হচ্ছে পারিবারিক কলহ। বিয়ে নিয়ে জটিলতা, যৌতুক ও বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক নিয়ে পারিবারিক কলহের জেরে ৪৫ জন আত্মহত্যা করেছেন। এর মধ্যে পুরুষ ২১ আর নারী ২৪ জন।
ভারতের ৩৬ রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মধ্যে মাত্র চারটি রাজ্যে কেন্দ্রীয় আধা সামরিক বাহিনীতে নারী কর্মকর্তাদের আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। আত্মহত্যার ঘটনার মধ্যে ২৯টি, অর্থাৎ ৪০ শতাংশই মধ্যপ্রদেশে ঘটেছে।