এ পি জে কালাম হওয়ার স্বপ্নে বিভোর ‘সমুচাওয়ালা’!
ভারতের তেলেঙ্গনা রাজ্যের হায়দরাবাদ শহরের কুকাতপল্লী এলাকার বাসিন্দা ভাবিলিশেট্টি মোহন আভাস। বয়স ১৭ বছর। মাকে ঝাল সমুচা বানাতে সাহায্য করে সে। আর ওই সমুচা হায়দরাবাদের রাস্তায় ঘুরে ঘুরে বিক্রি করেন আভাসের বাবা।
তবু আভাসের স্বপ্ন ভারতের পরমাণু বোমার জনক ও সাবেক রাষ্ট্রপতি এ পি জে আবদুল কালামের মতো হওয়ার।
এই স্বপ্ন বুকে নিয়ে আভাস সুযোগ পেয়েছে ভারতের অন্যতম সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজিতে (আইআইটি)। সর্বভারতীয় ইঞ্জিনিয়ারিং প্রবেশিকা পরীক্ষায় (জেইই) পরীক্ষায় ৬৪তম স্থান অধিকার করেছে সে। আভাসের স্বপ্ন, আইআইটিতে পড়েই সে একদিন এ পি জে আবদুল কালামের মতো হবে ।
প্রতিদিন ১০ ঘণ্টা করে পড়ে আভাস। অনেক সময় এটা তার জন্য খুবই কষ্টের ছিল। কারণ, মা-বাবা, দাদি ও বোনের সঙ্গে সমুচা তৈরিতেই তাকে ব্যস্ত থাকতে হতো সবসময়। বাড়িতে পড়ার সুযোগ নেই। তাই বিদ্যালয়ের অতিরিক্ত সময় থাকার অনুমতি নেয় সে।
তবে এই ফলাফলেও সন্তুষ্ট নয় আভাস। ভর্তি পরীক্ষায় আরো ভালো ফল করতে চেয়েছিল সে। সে বলে, ‘প্রথমে আমি খানিকটা হতাশ হয়েছিলাম। কিন্তু এখন আমি আমার অবস্থানে সন্তুষ্ট।’
নিজের স্বপ্নের কথা জানাতে গিয়ে আভাস বলে, ‘আমি ভবিষ্যতে একজন বিজ্ঞানী হতে চাই। সাহায্য করতে চাই আমার মা-বাবাকে। আমি তাদের সুখী দেখতে চাই।’
আভাস আরো বলে, ‘সমুচা তৈরি করা খুব কঠিন কাজ। আমরা কেন অতিরিক্ত চাপ নেব?’
আভাসের পরিবারের বার্ষিক আয় এক লাখ রুপির কম। কিন্তু তার বাবা-মার কাছে লেখাপড়াটাই আগে। বাবা সুবা রাও একাদশ শ্রেণির পরই ছেড়ে দিয়েছিলেন পড়ালেখা। ছেলেকে তিনি উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করতে তাই বদ্ধপরিকর। শুধু সন্তানদের পড়ালেখার জন্য ১৩ বছর আগে বিমাভার্মা গ্রাম থেকে হায়দরাবাদে পরিবার নিয়ে চলে এসেছিলেন সুবা। এখন হাতেনাতে ফলও পেলেন তিনি।
আভাসের মা সুরিয়া কালা তাঁর সন্তানের পছন্দকেই প্রাধান্য দেবেন উল্লেখ করে বলেন, ‘আমি কখনো তাকে বেশি পড়তে বলিনি। আমি কখনো তাকে বলিনি তোমাকে এটা করতেই হবে।’
আভাস তার পছন্দ অবশ্য ঠিক করেই ফেলেছে। সে বলে, ‘আমি একজন বিজ্ঞানীই হতে চাই। আইআইটি বম্বে থেকে পাস করে আমি আমার বাবা-মাকে সুখে রাখতে চাই।’