ভাগ্নির লাশ কাঁধে নিয়ে বাড়ি ফিরলেন মামা
সরকারি হাসপাতাল অ্যাম্বুলেন্স না দেওয়ায় ভাগ্নির লাশ কাঁধে নিয়ে এক হাতে সাইকেল চালিয়ে বাড়ি ফিরতে হলো মামাকে। স্থানীয় সময় সোমবার সকালে উত্তর প্রদেশের কৌশাম্বি জেলায় এ ঘটনা।
এটাই প্রথম নয়, এর আগেও এ রাজ্যে এমন কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে।
পুনম নামের এক সংখ্যালঘু শিশু ডায়রিয়ায় ভুগে গতকাল সোমবার সকালে হাসপাতালে মারা যায়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তার চাচা ব্রিজমোহনকে জানায়, যদি তিনি অ্যাম্বুলেন্সের তেলের খরচ দিতে পারেন, তবেই তারা তাঁর ভাগ্নির লাশ অ্যাম্বুলেন্সে করে বাড়ি পৌঁছে দেবে।
কিন্তু অ্যাম্বুলেন্সের খরচ বহন করার সামর্থ্য ছিল না পুনমের পরিবারের। তাই ব্রিজমোহন বাধ্য হয়ে ভাগ্নির লাশ কাঁধে নিয়ে এক হাতে সাইকেল চালিয়ে ১০ কিলোমিটার দূরে নিজ গ্রামে ফেরেন।
ব্রিজমোহন জানান, পুনমের পরিবারের জন্য চিকিৎসা খরচ বহন করাই কষ্টকর। তাঁর বাবা অনন্ত কুমার একজন দিনমজুর। তিনি তাঁর অসুস্থ মেয়েকে ব্রিজমোহনের কাছে রেখে এলাহাবাদে গেছেন চিকিৎসার জন্য টাকার ব্যবস্থা করতে।
ব্রিজমোহন বলেন, ‘আমি কীভাবে তেলের খরচ দেবো? আমার কাছে যা টাকা ছিল, তা তো চিকিৎসার পেছনে ব্যয় হয়ে গেছে।’
এদিকে, এ ঘটনার পর জেলা কর্তৃপক্ষ দায়িত্বরত চিকিৎসক ও অ্যাম্বুলেন্স চালকের বিরুদ্ধে স্থানীয় থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছে। কৌশাম্বির জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মনীশ কুমার ভার্মা জানান, এ ঘটনার প্রতিবেদন সরকারের কাছে পাঠানো হয়েছে।
জেলার মুখ্য চিকিৎসা কর্মকর্তা এস কে উপাধ্যায় জানান, এ ঘটনা তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অভিযুক্তদের অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে।
এস কে উপাধ্যায় বলেন, ‘জেলা হাসপাতালের প্রধান পরিচালক আমাকে জানিয়েছেন, সরকারের পক্ষ থেকে তাদের তেল সরবরাহ করা হয় না। হাসপাতালের কর্মীদের অর্থায়নেই প্রতিদিন ফুয়েলের ব্যবস্থা করা হয়।’
এর আগে গত ২০ মে এক বৃদ্ধ জেলা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অ্যাম্বুলেন্স দিতে না চাইলে তাঁর স্ত্রীকে স্ট্রেচারে করে নিয়ে যেতে শুরু করেছিলেন। পরে অবশ্য একজন চিকিৎসক এ ঘটনা দেখে তাঁকে লাশ বহনের জন্য একটি অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন।
কয়েক মাস আগে উত্তর প্রদেশের ইতাওয়াহ জেলার সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকের বিরুদ্ধে এক দিনমজুরকে তাঁর ১৫ বছর বয়সী সন্তানের লাশ কাঁধে করে বাড়ি নিয়ে যেতে বাধ্য করার অভিযোগ উঠেছিল।