বিগত লোকসভা নির্বাচনে ভারতের সবচেয়ে বড় রাজ্য উত্তরপ্রদেশে ভূমিধস বিজয়ের মধ্য দিয়ে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন বিজেপি দিল্লির মসনদ দখল করেছিল; এখন বিধানসভা ভোটে সেই ‘মোদি ম্যাজিকেই’ আবার উত্তরপ্রদেশে ভূমিধস বিজয় দেখল বিজেপি। আর এর মধ্য দিয়ে গেরোয়া রঙের দাপটে ম্লান হয়ে গেছে সমাজবাদী পার্টি-কংগ্রেস জোটের পাশাপাশি মায়াবতীর বহুজন সমাজবাদী পার্টিও। 

অপরদিকে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত, এদিন উত্তরাখণ্ডের মোট ৭০টি আসনের মধ্যে বিজেপি এগিয়ে রয়েছে ৫৪টিতে। সেখানে কংগ্রেসের অবস্থা আরো শোচনীয়। দলটি ১১টি আসনে এগিয়ে আছে।

অবশ্য বুথফেরত সমীক্ষা এ দুটি রাজ্যে কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন বিজেপিকে এগিয়ে রাখলেও, তার চেয়েও বেশি আসন জিতে নিয়েছে হিন্দুত্ববাদের দল বিজেপি।

উত্তরপ্রদেশ রাজ্যে বিজেপি একাই ৬০ শতাংশ আসনে এগিয়ে থেকে প্রায় দেড় দশক পর ক্ষমতায় প্রত্যার্বতন করতে চলেছে। সমাজবাদী পার্টি-কংগ্রেস জোটের থেকে প্রায় ১৩ শতাংশ ভোট বেশি পেয়েছে বিজেপি। মূলত উত্তরপ্রদেশের শহরাঞ্চলে ভালো ফল করেছে বিজেপি। কংগ্রেসের ‘খাসতালুক’ বলে পরিচিত রায়বেরিলিতেও একচেটিয়া আধিপত্য কায়েম করেছে বিজেপি।

উত্তরপ্রদেশের যাদব সম্প্রদায় অধ্যুষিত ৫০ শতাংশ আসনেও রীতিমতো টেক্কা দিয়েছে বিজেপি। দলিত সম্প্রদায় অধ্যুষিত ৬০ শতাংশ আসনেও দলিতনেত্রী মায়াবতীর বহুজন সমাজবাদী পার্টিকেও পেছনে ফেলে দিয়েছে বিজেপি। এখানকার সংখ্যালঘু আসনগুলোতেও যথেষ্ট ভালো ফল করেছে বিজেপি।

উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের মোট ৪০৩টি বিধানসভা আসনের মধ্যে বিজেপি ৩১৪টি, সমাজবাদী পার্টি ও কংগ্রেস জোট ৬৭টি, বহুজন সমাজবাদী পার্টি ১৭টি এবং অন্যরা পাঁচটি আসনে এগিয়ে রয়েছে।

অন্যদিকে, কংগ্রেসকে হটিয়ে উত্তরাখণ্ড রাজ্য দখলের পথে বিজেপি। উত্তরাখণ্ডের প্রায় ৮০ শতাংশ আসনে এগিয়ে রয়েছে বিজেপি। এই রাজ্যের ৩৬টি ম্যাজিক ফিগারের মধ্যে বিজেপি অনেক বেশি আসনে এগিয়ে রয়েছে। উল্লেখযোগ্যভাবে এখানে হরিদ্বার গ্রামীণ এবং কিছা এই দুটি আসনেই হেরে গেছে মুখ্যমন্ত্রী হরিশ রাওয়াত।

উত্তরখণ্ডের মোট ৭০টি আসনের মধ্যে বিজেপি এগিয়ে রয়েছে ৫৪টি, কংগ্রেস ১১টি এবং অন্যরা ২টি আসনে। তবে বাকি তিনটি আসনে এগিয়ে রয়েছে কংগ্রেস।

চূড়ান্ত ফলাফল এখনো ঘোষণা হয়নি। তবে ভারতের সব থেকে বৃহত্তম রাজ্য উত্তরপ্রদেশ ও উত্তরাখণ্ড রাজ্যে বিজেপির জয় একরকম নিশ্চিত হতেই সেখানে শুরু হয়েছে বিজেপিকর্মী সমর্থকদের মধ্যে গেরুয়া আবির খেলা। বিজেপি শিবিরে এখন খুশির হাওয়া।

বিজেপির এই সাফল্যে বিজেপির সাধারণ সম্পাদক কৈলাস বিজয়বর্গীয় জানান, এই বিপুল জয়ের পুরো কৃতিত্ব মোদি ও তাঁর সরকারের দারিদ্র্যমুখী নীতি ও বিজেপি সভাপতি অমিত শাহর কৌশল। বিজেপির এই সাফল্য মূলত বিজেপির ওপর সাধারণ মানুষের আস্থার প্রতিফলন।