শাবক পোষার উদ্দেশ্যে সিংহের প্রজনন নিষিদ্ধ করছে দক্ষিণ আফ্রিকা
শিকারের জন্য অথবা পর্যটকদের কাছে পোষ্য হিসেবে সিংহশাবক বিক্রির উদ্দেশে সিংহের প্রজনন বন্ধ করতে পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
সিংহ আটকে রেখে প্রজননের বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের ওপর দুই বছর ধরে চালানো একটি গবেষণা প্রকাশ হওয়ার পর দক্ষিণ আফ্রিকা সরকার এই পদক্ষেপ নিল। গবেষণায় দেখা গেছে, সিংহ আটকে রেখে প্রজননের কর্মকাণ্ডের কারণে প্রাণীটি রক্ষায় নেওয়া উদ্যোগগুলো ঝুঁকির মুখে পড়ছে এবং বন্যপ্রাণীর ক্ষতি করছে।
বিবিসি বলছে, বিশেষজ্ঞদের সুপারিশ গ্রহণ করে ব্যবস্থা নিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকার সরকার, যা হয়তো দেশটির পেশাদার শিকারের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের ক্ষুব্ধ করে তুলতে পারে।
দক্ষিণ আফ্রিকার পরিবেশমন্ত্রী বারবারা ক্রেসি বলেছেন, ‘আটকে রাখা সিংহের প্রজননের ব্যাপারে বেশির ভাগ প্রতিবেদনেই যা বলা হয়েছে, তাতে আমাদের অবশ্যই সিংহ ধরে প্রজনন বা লালনপালন করা এবং এর মাধ্যমে এগুলোকে গৃহপালিত করে তোলার মতো কর্মকাণ্ড বন্ধ করতে হবে।’
‘সিংহ আটকে প্রজনন করা, আটকানো সিংহ শিকার করা, সিংহ আটকে ব্যবহার করা কিংবা সেগুলোকে পোষ মানানো হোক, তা আমরা চাই না’, বলেন বারবারা ক্রেসি।
তবে দক্ষিণ আফ্রিকার পরিবেশমন্ত্রী একইসঙ্গে জানিয়েছেন, বনে নিয়ন্ত্রিত পরিসরে সিংহ শিকার কার্যক্রম অব্যাহত রাখা হবে। সিংহ শিকার দেশটির পর্যটন শিল্পে আয়ের অন্যতম একটি মাধ্যম।
যে বিশেষজ্ঞ দলের পরামর্শে সিংহশাবক পোষার উদ্দেশ্যে প্রজনন বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, সে দলটি সিংহ, চিতাবাঘ, গণ্ডার ও হাতি সম্পর্কিত নীতি ও বিধিবিধান পর্যালোচনার জন্য গঠন করা হয়েছিল।
গণ্ডারের শিং ও হাতির দাঁতের ব্যবসা বন্ধ করতে আফ্রিকার দক্ষিণাঞ্চলের অন্যান্য দেশের সঙ্গে আলোচনা করার পরামর্শ দিয়েছে ওই কমিটি।
ধারণা করা হয়, দক্ষিণ আফ্রিকায় আট হাজারের বেশি সিংহ আটক অবস্থায় রয়েছে। যেখানে অরণ্যে রয়েছে মাত্র সাড়ে তিন হাজারের মতো সিংহ।
অন্যদিকে সিংহ আটকে রেখে প্রজননকারীরা বলছেন, তারা বরং এভাবে প্রজনন করার মাধ্যমে বন্যপ্রাণী রক্ষা করছেন। তবে একে খুবই নিষ্ঠুর ও শোষণমূলক ব্যবস্থা বলছেন সমালোচকেরা।
বন্যপ্রাণী রক্ষায় বৈশ্বিক দাতব্য সংস্থা ওয়ার্ল্ড অ্যানিম্যাল প্রটেকশন দক্ষিণ আফ্রিকার এই ঘোষণাকে ‘বন্যপ্রাণীর জন্য একটি বিজয়’ বলে বর্ণনা করেছে।