মার্কিন কংগ্রেস ভবনে সহিংসতার ঘটনায় নিহত ৪, ওয়াশিংটন ডিসিতে কারফিউ
যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস ভবনে ডোনাল্ড ট্রাম্প সমর্থকদের ব্যাপক বিক্ষোভ, ভাঙচুর ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। দেশটির রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসির পুলিশ জানিয়েছে কংগ্রেসের ভবন ক্যাপিটলে সহিংসতায় অন্তত চারজন নিহত হয়েছে। সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
এর আগে জানা গিয়েছিল ক্যাপিটল ভবনে হামলার ঘটনায় পুলিশের গুলিতে এক নারী নিহত হন। পরে ‘মেডিকেল ইমার্জেন্সি’ পরিস্থিতি তৈরি হলে আহত আরো তিনজনের মৃত্যু হয়।
এদিকে ক্যাপিটল ভবনে হামলার ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৫২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ৪৭ জনকে কারফিউ ভঙ্গের অপরাধে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত নারী সাবেক সেনা সদস্য
যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে, ক্যাপিটল ভবনে প্রবেশ করার পর গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত প্রথম নারী অ্যাশলি ব্যাবিট একজন সাবেক মার্কিন সেনা সদস্য। তিনি স্যান ডিয়েগোর বাসিন্দা ছিলেন।
অ্যাশলি ব্যাবিট ওয়াশিংটন সময় গতকাল বুধবার দুপুর ৩টার দিকে গুলিবিদ্ধ হন। পরে হাসপাতালে নিলে তাঁকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
ওয়াশিংটন ডিসি মেয়রের সংবাদ সম্মেলন
ওয়াশিংটন ডিসির মেয়র মুরিয়েল বাউজার ক্যপিটল হিলের বিক্ষোভ প্রসঙ্গে একটি সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন। তিনি জানান হাউস রুমে অধিবেশন চলাকালে কয়েকজন সেখানে জোরপূর্বক প্রবেশ করে। গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হওয়া নারী অনুপ্রবেশকারী ওই দলটির সদস্য ছিলেন।
ক্যাপিটলে অনুপ্রবেশকারী দলটিকে সাদা পোশাকের কয়েকজন কর্মকর্তা বাধা দেন এবং ওই কর্মকর্তাদের একজনের গুলিতে একজন নারী নিহত হন।
ওয়াশিংটন ডিসির মেয়র বাউজার জানান নিহত বাকি তিনজনের একজন নারী ও দুজন পুরুষ। এ ছাড়া মেট্রো পুলিশ বিভাগের অন্তত ১৪ জন সদস্য আহত হয়েছেন বলে জানান তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রের আইন প্রণেতারা যখন গত নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জো বাইডেনের জয় আনুষ্ঠানিকভাবে অনুমোদন করার জন্য অধিবেশনে বসেছিলেন, সেই সময় স্থানীয় সময় গতকাল বুধবার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শত শত সমর্থক মার্কিন আইনসভা কংগ্রেসের ভবন ক্যাপিটলে ঢুকে পড়ে। কয়েক ঘণ্টা কংগ্রেস ভবন কার্যত দখল করে রাখার পর বিক্ষোভকারীরা ধীরে ধীরে ক্যাপিটল প্রাঙ্গণ ছেড়ে বাইরে চলে যেতে থাকে।
এ ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটনে স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা থেকে ১২ ঘণ্টার কারফিউ ঘোষণা করা হয়েছে।
গতকাল দুপুরের পরই যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানীতে নাটকীয় দৃশ্যে দেখা যায়— শত শত বিক্ষোভকারী ভবনটিতে ঢুকে পড়ছে আর পুলিশ কংগ্রেস সদস্যদের নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিচ্ছে।
নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এ ঘটনাকে ‘বিদ্রোহ’ বলে আখ্যায়িত করেন। অন্যদিকে ডোনাল্ড ট্রাম্প এক ভিডিও বার্তায় তাঁর সমর্থকদের বাড়ি ফিরে যেতে অনুরোধ করেন।
এই শোরগোলের মধ্যে বাইডেনের জয় অনুমোদন করার জন্য কংগ্রেসের দুই কক্ষ—হাউস অব রেপ্রেজেন্টেটিভস বা প্রতিনিধি সভা ও সিনেটের যৌথ অধিবেশন সাময়িক স্থগিত করা হয়। পরে ক্যাপিটল ভবন নিরাপদ হওয়ায় স্থানীয় সময় রাত ৮টায় কংগ্রেস নেতারা যৌথ অধিবেশন আবার শুরু করেন। এ অধিবেশনে জো বাইডেনের জয় আনুষ্ঠানিকভাবে অনুমোদন করবেন।