বৈরুতে ‘বোমা বিস্ফোরণ’ হয়েছে, বললেন ট্রাম্প
লেবাননের রাজধানী বৈরুতের বন্দর এলাকায় গতকাল মঙ্গলবারের জোড়া বিস্ফোরণকে লেবাননের এযাবৎকালের অন্যতম বড় বিস্ফোরণ বলে মনে করা হচ্ছে। এ বিস্ফোরণে প্রায় গোটা রাজধানী কেঁপে উঠেছিল। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রাথমিকভাবে এ বিস্ফোরণকে ‘হামলা’ বলে মনে করেছিলেন। হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের গতকাল ট্রাম্প জানান, তাঁর জেনারেলরা বিস্ফোরণের খবর তাঁকে দিয়েছেন। জেনারেলদের ধারণা, অত্যন্ত শক্তিশালী বোমা বিস্ফোরণ হয়েছে। রাসায়নিক পদার্থ থেকে এত বড় বিস্ফোরণ হতে পারে না বলেই তাঁদের মনে হয়েছে। ট্রাম্পের আশঙ্কা, এটি বোমা হামলা। সংবাদমাধ্যম ফক্স নিউজ এ খবর জানিয়েছে।
ট্রাম্প বলেন, ‘আমাদের কয়েকজন জাঁদরেল জেনারেলের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। তাঁদের কথায় মনে হয়েছে, তাঁদের ধারণা এটা কোনো ধরনের রাসায়নিক পদার্থের বিস্ফোরণের ঘটনা নয়। তাঁদের ধারণা, এটা হামলা ছিল। ওটা কোনো ধরনের বোমা ছিল।’
বৈরুতের বন্দর এলাকায় বিস্ফোরণে বহুদূর পর্যন্ত ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অন্তত ৭৮ জন নিহত ও চার হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। আজ বুধবারও বহু বাড়ির ধ্বংসাবশেষ থেকে আহতদের উদ্ধারের কাজ চলছে। কার্যত ধসে গেছে গোটা শহর। বৈরুত থেকে প্রায় ২৪০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত সাইপ্রাস। সেখান থেকেও বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে বলে জানা গেছে। বিস্ফোরণের চার-পাঁচ ঘণ্টা পরও গোটা শহরে কেবলই অ্যাম্বুলেন্সের সাইরেন শোনা গেছে বলে সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলে জানিয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য, বৈরুতের প্রায় প্রতিটি হাসপাতালই আহত ব্যক্তি দিয়ে ভরা।
লেবাননের ভয়াবহ বিস্ফোরণের পর বহু দেশই সমবেদনা জানিয়েছে। জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন।
বৈরুতে বিস্ফোরণের পর ইসরায়েলের দিকে সন্দেহের তীর ওঠে। কিন্তু বিস্ফোরণের পরই অবশ্য ইসরায়েল বিবৃতি দিয়ে জানিয়ে দেয়, এ ঘটনার সঙ্গে কোনোভাবেই তারা জড়িত নয়। হিজবুল্লাহও এ ঘটনার সঙ্গে ইসরায়েলের যুক্ত থাকার দাবি করেনি। কয়েক দিন ধরে ইসরায়েল-লেবানন-সিরিয়া সীমান্তে উত্তেজনা চলছে। ফলে প্রাথমিকভাবে অনেকেই মনে করেছিলেন, বৈরুতের বিস্ফোরণের সঙ্গে সীমান্ত সংঘর্ষের বিষয়টি জড়িত।
বছরখানেক ধরে ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটে ভুগছে লেবানন। লেবাননজুড়ে বহু বিক্ষোভও হয়েছে। করোনাকালে সংকট আরো বেড়েছে। তারই মধ্যে এ বিস্ফোরণের ঘটনা সরকারকে আরো সমস্যায় ফেলল। আজ বুধবার দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর আগামী দুই সপ্তাহ জরুরি অবস্থা থাকতে পারে বলে ইঙ্গিত মিলেছে।