বেঁচে ফিরতে পারলেন না করোনা আক্রান্ত উহানের হাসপাতাল পরিচালক

শেষ পর্যন্ত বেঁচে ফিরতে পারলেন না করোনাভাইরাসে আক্রান্ত চীনের উহান শহরের উচাং হাসপাতালের পরিচালক ডা. লিউ ঝিমিং। চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সাড়ে ১০টার দিকে মৃত্যু হয় তাঁর। বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
এদিকে চীনের বিভিন্ন গণমাধ্যমে এর আগে ছড়িয়ে পড়েছিল, গতকাল সোমবার মৃত্যু হয় লিউ ঝিমিংয়ের। তবে সংবাদমাধ্যম দ্য ডেইলি মেইল উহানের স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে জানিয়েছিল, আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন থাকলেও, গতকাল পর্যন্ত বেঁচে ছিলেন লিউ ঝিমিং। তবে এখন জানা গেল, আজ সকালে মৃত্যু হয় তাঁর।
হুবেই প্রদেশের স্বাস্থ্য কমিশনের পরিচালক গতকাল জানিয়েছিলেন, গুরুতর অসুস্থ হওয়ার পর লিউ ঝিমিংয়ের চিকিৎসা চলছে। তিনি লাইফ সাপোর্টে ছিলেন বলে জানিয়েছিল উহান সেন্ট্রাল হাসপাতাল। তবে শেষ পর্যন্ত জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থেকে বেঁচে ফিরতে পারলেন না করোনাভাইরাস আক্রান্তদের জন্য নিরলস কাজ করে যাওয়া এই হাসপাতাল প্রধান।
এদিকে চীনে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে এক হাজার ৮৬৪ জনে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে একদিনেই মৃত্যু হয়েছে ৯৮ জনের। যাঁদের ৯৩ জনই হুবেই প্রদেশের এবং বাকি পাঁচজন দেশটির বিভিন্ন প্রদেশের বাসিন্দা। এ ছাড়া শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত আজ মঙ্গলবার প্রাণঘাতী এ ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭২ হাজার ৪৩৬ জনে। নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা এক হাজার ৮৮৬। চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশনের বরাত দিয়ে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা এ খবর জানিয়েছে।
করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা কখনো বাড়ছে আবার কখনো কমছে। কখনো আবার আগের জায়গায় স্থবির হয়ে আছে। এ ছাড়া আক্রান্তের তালিকায় যুক্ত হচ্ছে নতুন নতুন দেশের নাম। চীনে এ ভাইরাসটি মোকাবিলায় কাজ করে যাচ্ছেন সামরিক ও বেসামরিক চিকিৎসক দল। তবুও যেন পরিস্থিতি সামলে নেওয়া যাচ্ছে না।
উহানের টনজি হাসপাতালের চিকিৎসক ডাই ওয়েইমিন বলেন, ‘জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশনের দেওয়া নিয়মগুলো আমরা কঠোরভাবে পালন করছি। রোগীর অবস্থার ওপর নির্ভর করেই আমরা তাঁদের চিকিৎসা দিচ্ছি।’
এদিকে প্রায় পুরো পৃথিবীর বাণিজ্যের সঙ্গেই কোনো না কোনোভাবে চীনের সংযোগ আছে, যার ওপর মারাত্মক প্রভাব পড়ছে। বেশ কিছু নগরীতে যোগাযোগে নিষেধাজ্ঞা থাকায় এক প্রকার স্থবির হয়ে পড়েছে উৎপাদন।
সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থায় থাকা হুবেই প্রদেশের উহান নগরীর ওপর আবারও বেশ কিছু কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। যার মধ্যে অন্যতম, সেখানে সব ধরনের ব্যক্তিগত গাড়ি চলাচলে নিষেধাজ্ঞা। খুব প্রয়োজনে অ্যাম্বুলেন্স ব্যবহার করতে পারবেন বাসিন্দারা।
এদিকে গতকাল রোববার জাপানের ইয়োকোহামায় কোয়ারেন্টাইনে থাকা প্রমোদতরী ডায়মন্ড প্রিন্সেস থেকে ৪০০ জন মার্কিন নাগরিককে বের করা হয়েছে। যাদের মধ্যে কোভিড-১৯ বা কোভিড-নাইনটিন আক্রান্ত ৪০ জনকে জাপানেই চিকিৎসা দেওয়া হবে। বাকিদের দুটি বিমানে করে যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে যাওয়া হয়।