নন্দিনীর হোটেলে বিধায়ক মদন মিত্র, অর্ডার দেন ৩২০ প্লেট
কলকাতার বুকে এই মুহূর্তে ফুটপাতের খাবারের কথা বললে শোনা যাবে একটাই নাম- নন্দিনীদির হোটেল। খাস কলকাতার ডালহৌসি পাড়ায় ফুটপাতে হোটেল চালান নন্দিনী গাঙ্গুলী। যে হোটেলের খাবারের স্বাদে শুধু সাধারণ মানুষ নয়, মজেছেন কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্রও।
নন্দিনীর হোটেলে গিয়ে মদন মিত্র ৩২০ প্লেট চিকেন থালির অর্ডার দেন। এতো খাবারের অর্ডার পেয়ে একদিকে যেমন অভিভূত নন্দিনী, তেমনি মদন মিত্রের আগমণে হোটেলটি পেল আরও জনপ্রিয়তা।
নন্দিনী গাঙ্গুলি মূলত ফ্যাশন ডিজাইনের ছাত্রী। চাকরি করতেন গুজরাট রাজ্যে। কিন্ত করোনার সময়ে নন্দিনীর বাবা আর্থিকভাবে খুবই সমস্যায় পড়েন। সেই সময় বাবাকে সাহায্য করতে কলকাতায় ফিরে আসেন নন্দিনী। কলকাতার ডালহৌসিতে একটি বন্ধপ্রায় রুটির দোকান ভাড়া নিয়ে শুরু করেন ব্যবসা। কিন্ত প্রথম দিকে সেই ব্যবসা সেইভাবে জমে ওঠেনি। এরপর হাল ধরেন নন্দিনী।
তিন বোনের মধ্যে নন্দিনী ছোট। বাকি দুই বোনের বিয়ে হয়ে গেছে। তবে নন্দিনী বাবাকে সাহায্য করতে কাজ শুরু করেন ফুটপাতের হোটেলে। রান্না, খাবার পরিবেশন ও টাকা কালেকশন করা সবই নিজ হাতে করেন তিনি। এরপরই ভাগ্য ফেরে নন্দিনীর। এক ইউটিউবার হোটেলের একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোড করতেই ভাইরাল হয় নন্দিনীর হোটেল।
প্রথমদিকে দিনে মাত্র ২০ থেকে ২৫ প্লেট খাবার বিক্রি হলেও এখন বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ প্লেট। এর বেশি অর্ডার নিতে পারছেন না তিনি। অথচ মানুষের ভিড় লেগে থাকছে নন্দিনীর হোটেলে।
এরই মধ্যে মদন মিত্র লোকমুখে জানতে পারেন নন্দিনীর হোটেলের কথা। ব্যাস, তারপরই তিনি হাজির ডালহৌসি পাড়ায় নন্দিনীর হোটেলে। মদন মিত্রকে হোটেলে পেয়ে নন্দিনী তাকে এক প্লেট স্পেশ্যাল ‘চচ্চড়ি’ খেতে দেন। আর চচ্চড়ি খেয়েই নন্দিনীর খাবারে মজে যান মদন মিত্র। তিনি বেলঘরিয়ায় বাচ্চাদের একটি স্কুলের অনুষ্ঠান উপলক্ষে ৩২০ প্লেট চিকেন থালির অর্ডার করেন নন্দিনীর হোটেলে। আর এই খবরে এলাকায় এখন আলোচনার কেন্দ্রে নন্দিনীর হোটেল।
মদন মিত্র জানান, বাচ্চাদের জন্য ভালো খাবারের খোঁজ করছিলেন তিনি। আর সেই সময়েই নন্দিনীর হোটেলের খবর পেয়ে যান। এরপর নিজে হোটেলের খাবারের মান যাচাই করে অর্ডার দেন ৩২০ প্লেট চিকেন থালির।
এদিকে, মদন মিত্র তার ফুটপাতের দোকানে আসায় খুশি নন্দিনী। তিনি মদন মিত্রকে কাছে পেয়ে দাবি করেন, মদন মিত্র যাতে কলকাতার ফুটপাতের ব্যাবসায়ীদের নানা সমস্যা নিয়ে একটু ভাবনা চিন্তা করেন এবং হকার উচ্ছেদ না করা হয়।
এই বিষয়ে মদন মিত্র নন্দিনী গাঙ্গুলীকে আশ্বস্ত করে বলেন, হকাররা যাতে প্ল্যাষ্টিক ব্যবহার কম করে এবং ফুটপাতের উপর যাতে কম জায়গা ব্যবহার করে ব্যবসা করার চেষ্টা করেন। তাহলেই বাকিটা তিনি দেখে নেওয়ার চেষ্টা করবেন।