করোনাভাইরাস : যে ওষুধ ব্যবহারের প্রস্তাব দিল আইসিএমআর
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের ওপর কোন ওষুধ কাজ করে, তা নিয়ে গবেষণা চলছেই। একাধিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা (ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল) শেষে করোনায় আক্রান্তদের ওপর ম্যালেরিয়ার ওষুধ ব্যবহারের প্রস্তাব দিল ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিকেল রিসার্চ (আইসিএমআর)।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে উঠে আসছিল বেশ কিছু পরিচিত ওষুধের নাম। তার মধ্যে ছিল ম্যালেরিয়া, এইচআইভি ও ইবোলার মতো প্রাণঘাতী ভাইরাস রুখতে সাহায্য করা ওষুধের নাম। এ ছাড়া ছিল কিছু অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের প্রস্তাবও। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম নিউজ১৮ এ খবর জানিয়েছে।
উচ্চমাত্রায় সংকটাপন্ন নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন ব্যবহারের প্রস্তাব দিয়েছে আইসিএমআর। তবে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলেই কোনো ব্যক্তির শরীরে ওই ওষুধ প্রয়োগ করা যাবে না। এ ক্ষেত্রে কোনো রোগীর শারীরিক অবস্থা অত্যন্ত সংকটজনক হলেই কেবল হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন ব্যবহার করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া করোনায় আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসা করছেন বা দেখাশোনা করছেন, এমন ব্যক্তি প্রতিষেধক হিসেবে ওষুধটি নিতে পারবেন।
করোনাভাইরাসজনিত বর্তমান পরিস্থিতিতে এখনই কী কী পদক্ষেপ নেওয়া অবশ্য কর্তব্য সে বিষয়ে একমত হয়েছেন বিশ্বের এক ডজন ফ্লু, ইবোলা, সার্সসহ বিভিন্ন মহামারি বিশেষজ্ঞ। তাঁদের সাক্ষাৎকার নিয়ে, এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম দ্য নিউইয়র্ক টাইমস। মূলত যুক্তরাষ্ট্রের পরিস্থিতিকে কেন্দ্র করে লেখা হলেও, প্রতিবেদনে সারা বিশ্বের পরিস্থিতিও উঠে এসেছে। চীনের উহানে কীভাবে করোনার সংক্রমণ বন্ধ করা গেছে; দক্ষিণ কোরিয়া কীভাবে কঠোর পদক্ষেপ নিয়ে সংক্রমণ মোকাবিলা করছে; এশিয়ার কোন কোন দেশ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ মেনে চলছে— এ সবই উঠে এসেছে প্রতিবেদনে, যার শিরোনাম দেওয়া হয়েছে : ‘দ্য ভাইরাস ক্যান বি স্টপড, বাট ওনলি উইদ হার্ড স্টেপস, এক্সপার্টস সে’ (করোনাভাইরাসকে থামানো যাবে, কিন্তু কেবল কঠোর পদক্ষেপ নিলেই তা সম্ভব, বলছেন বিশেষজ্ঞরা)। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, করোনার উপসর্গের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ওষুধ বা ক্ষেত্রবিশেষে কার্যকর ওষুধগুলো চিহ্নিত করে, সেগুলোর পর্যাপ্ত সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। চীন, ইতালি ও ফ্রান্সের চিকিৎসকরা ফার্মেসিতে থাকা ওষুধ নিয়ে রীতিমতো যুদ্ধ করছেন। কোন ওষুধ একটু হলেও কাজে লাগে, তা জানার প্রাণান্ত চেষ্টা করছেন। এখন পর্যন্ত অন্তত দুটি সম্ভাবনার কথা জানা গেছে, যেগুলো কিছুটা হলেও হয়তো কার্যকর। এর একটি হচ্ছে, ম্যালেরিয়ার দুটি ওষুধ ‘ক্লোরোকুইন ও হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন’; আর অন্যটি হলো অ্যান্টিভাইরাল ‘রেমদেসিভির’, যেটি অবশ্য স্বীকৃত নয়, অর্থাৎ বৈধ ব্যবহার (লাইসেন্সড ইউজ) নেই ওষুধটির।
তবে, এসব ওষুধ যে আসলেই কার্যকর, তার কোনো প্রমাণ নেই এখনো। ইতালি ও ফ্রান্সে ওষুধ নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। আর নিউইয়র্কের হাসপাতালগুলোতে ওষুধের পরীক্ষামূলক ব্যবহারের বিধিমালা প্রস্তুত করা হচ্ছে।