এক লাখ লাশের ব্যাগ চেয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের জরুরি ব্যবস্থাপনা সংস্থা
মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তরের কাছে এক লাখ লাশের ব্যাগ চেয়েছে দেশটির কেন্দ্রীয় জরুরি ব্যবস্থাপনা সংস্থা বা এফইএমএ। বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রে সামনের সপ্তাহগুলোতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণে মৃত্যুর সংখ্যা অনেক বাড়বে বলে আশঙ্কা করছে দেশটির প্রশাসন। এমন পরিস্থিতিতে বেসামরিক কর্তৃপক্ষের কাছে এক লাখ লাশের ব্যাগ সরবরাহ করতে চায় মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগন।
পেন্টাগনের এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে রয়টার্স গতকাল বুধবার জানিয়েছে, প্রতিরক্ষা দপ্তরের কাছে এক লাখ লাশের ব্যাগ চেয়ে অনুরোধ জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় জরুরি ব্যবস্থাপনা সংস্থা বা এফইএমএ।
পেন্টাগনের ওই কর্মকর্তা জানিয়েছেন, আরো লাশের ব্যাগ সরবরাহের জন্য এরই মধ্যে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার বা বর্তমান প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে প্রতিরক্ষা দপ্তরের সরবরাহকারী সংস্থা ডিএলএ।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে পেন্টাগনের ওই কর্মকর্তা আরো জানিয়েছেন, প্রথম ধাপে ডিএলএর মজুদ থেকে লাশের ব্যাগ সরবরাহ করা হবে। এসব ব্যাগের প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান এরই মধ্যে আরো ব্যাগ উৎপাদন শুরু করে দিয়েছে।
এফইএমএর পক্ষ থেকে চাওয়া ব্যাগ কবে নাগাদ সরবরাহ করতে হবে, এখন পর্যন্ত তার কোনো সুনির্দিষ্ট তারিখ ডিএলএ কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়নি। তবে যত দ্রুত সম্ভব এসব ব্যাগ হাতে পেতে চায় এফইএমএ।
সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ জানিয়েছিল, প্রতিরক্ষা দপ্তর শুরুতে তাদের কাছে মজুদ ৫০ হাজার লাশের ব্যাগ সরবরাহ করবে। এর পাশাপাশি পেন্টাগন আরো ব্যাগ কিনতে চায় বলেও জানিয়েছিল ব্লুমবার্গ। প্রতিরক্ষা দপ্তরের কাছে মজুদ লাশের ব্যাগগুলো সাধারণত যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়।
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে জর্জরিত যুক্তরাষ্ট্র। করোনার সংক্রমণে গত ২৪ ঘণ্টায় যুক্তরাষ্ট্রে মারা গেছে রেকর্ড ৮৮৪ জন। দেশটিতে মৃত্যুর মোট সংখ্যা পাঁচ হাজার ছাড়িয়েছে।
এর মধ্যেই গত মঙ্গলবার ভয়ানক আশঙ্কার কথা জানিয়েছে হোয়াইট হাউস। মার্কিন প্রশাসনের আশঙ্কা, সামাজিক বিচ্ছিন্নতা মেনে চললেও কোভিড-নাইনটিনে দেশটিতে এক লাখ থেকে দুই লাখ ৪০ হাজার মানুষের মৃত্যু হবে।
হোয়াইট হাউসের করোনাভাইরাস বিষয়ক টাস্কফোর্সের সমন্বয়ক ড. ডেবোরা বার্ক্স বলেন, ‘ইতালি ও অন্য দেশগুলোতে যে অবস্থা, তার পরিপ্রেক্ষিতে ধারণা করছি, যুক্তরাষ্ট্রে করোনা মহামারিতে এক থেকে দুই লাখের মতো মানুষ মারা যাবে। আমরা প্রতিনিয়ত ব্যবস্থা বাড়াচ্ছি। নাগরিকরা নির্দেশিত নিয়মকানুন মেনে চলছে। কিন্তু তারপরও প্রাণহানি এ অনুমানের মধ্যেই থাকবে।’
ড. ডেবোরা বার্ক্স আরো বলেন, ‘কোনো ম্যাজিক ভ্যাকসিন বা থেরাপি নেই। আমাদের আচরণই বলে দেবে আগামী ৩০ দিনে পরিস্থিতি কোনদিকে যাবে।’ জোরালোভাবে সামাজিক বিচ্ছিন্নকরণ বা সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার পক্ষে মত দিয়ে ড. ডেবোরা বার্ক্স একটি চার্টের মাধ্যমে দেখিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রে এক লাখ থেকে দুই লাখ ৪০ হাজার মানুষের করোনায় মৃত্যু হতে পারে।
এদিকে হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে গতকাল মঙ্গলবার ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘আগামী দুই সপ্তাহ খুব, খুব যন্ত্রণাদায়ক হতে যাচ্ছে। আগামী দিনে যে কঠিন দিন আসতে যাচ্ছে, সে জন্য সব আমেরিকানকে প্রস্তুত থাকতে বলছি।’