উহান ল্যাবে গবেষণা করা ভাইরাসের নমুনার জেনেটিক তথ্য যুক্তরাষ্ট্রের হাতে

নভেল করোনাভাইরাসের উৎস জানতে গুরুত্বপূর্ণ জেনেটিক তথ্য যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর হাতে এসেছে। এসব তথ্য তারা এখন যাচাই-বাছাই ও বিশ্লেষণ করছে। সংবাদমাধ্যম সিএনএন এ খবর জানিয়েছে।
বিষয়টির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র সিএনএনকে জানিয়েছে মার্কিন গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের কাছে তথ্যের এক বিশাল ভাণ্ডার এসেছে। যেখানে চীনের উহান ল্যাবে গবেষণা করা ভাইরাসের নমুনা থেকে পাওয়া জেনেটিক ব্লুপ্রিন্টও রয়েছে। চীনের কিছু কিছু কর্মকর্তারাও বিশ্বাস করেন, এখানেই সম্ভবত কোভিড-১৯ সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার সূত্র পাওয়া যাবে।

তবে, মার্কিন গোয়েন্দা কর্মকর্তারা কবে অথবা কীভাবে এসব তথ্য পেলেন, সে বিষয়টি পরিষ্কার নয়। অবশ্য বিষয়টির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ভাইরাস থেকে এ ধরনের জেনেটিক তথ্য তৈরি ও প্রক্রিয়াকরণের সঙ্গে জড়িত যন্ত্রগুলো মূলত বাহ্যিক ক্লাউড সার্ভারের সঙ্গে সংযুক্ত থাকে। ফলে এ ধরনের যন্ত্রগুলো হ্যাক হয়ে থাকতে পারে। বিপুল এই তথ্য এখন ব্যবহারযোগ্য করে তুলতে অনুবাদ করা হচ্ছে।
করোনাভাইরাস বা কোভিড-১৯ মহামারির উৎস জানতে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে দেশটির প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন যে ৯০ দিন সময় বেঁধে দিয়েছেন, তার অংশ হিসেবে এই কর্মযজ্ঞ চলছে। এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। এ কাজের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর ডিপার্টমেন্ট অব এনার্জি’স ন্যাশনাল ল্যাবের সুপারকম্পিউটারগুলোর ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, নির্ধারিত ৯০ দিন শেষ হওয়ার পরেও মহামারির উৎস অনুসন্ধানে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো তাদের কাজ শেষ করতে পারবে না। এর আগে প্রশাসনিক বিভাগের কর্মকর্তারা সিএনএনকে জানিয়েছেন, ৯০ দিন শেষ হওয়ার পর দ্বিতীয়বার পর্যালোচনা করার নির্দেশ আসতে পারে।
সিএনএনের খবরে বলা হয়, কাজটি শেষ করতে জটিল সিকোয়েন্সিং জেনেটিক ডাটা ব্যাখ্যা করার জন্য পর্যাপ্ত দক্ষ সরকারি বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা প্রয়োজন গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর। পাশাপাশি এই বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তাদের যথাযথ নিরাপত্তার ব্যবস্থা থাকতে হবে এবং মান্দারিন ভাষায় কথা বলা জানতে হবে, কারণ এই তথ্যগুলো চীনা ভাষায় লেখা।
একাধিক সূত্র সিএনএনকে জানিয়েছে, কোভিড-১৯ ল্যাব থেকে নাকি বন্য প্রাণী থেকে মানুষের শরীরে স্থানান্তরিত হয়েছে, তা নিশ্চিতভাবে জানতে এই তথ্যভাণ্ডার উন্মোচন করা খুবই জরুরি।
উহান ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজিতে ২২ হাজার ভাইরাস নমুনার ওপর গবেষণা করা জেনেটিক তথ্য দীর্ঘ দিন ধরেই চেয়ে আসছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি ও বেসরকারি গোয়েন্দা কর্মকর্তারা। কিন্তু, ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরেই ইন্টারনেট থেকে এসব তথ্য মুছে ফেলেছিলেন চীনা কর্মকর্তারা। আর এর পর থেকেই চীন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ( ডব্লিউএইচও) এবং যুক্তরাষ্ট্রের কাছে এসব তথ্যসহ করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের শুরুর দিকের মূল তথ্যগুলো দিতে অস্বীকার করে আসছে।
নভেল করোনাভাইরাস নিয়ে গবেষণা করেছেন এমন দুজন বিজ্ঞানী সিএনএনকে জানিয়েছেন, তাঁরা সন্দেহ করছেন এই ২২ হাজার নমুনার মধ্যে কোনো জিনগত তথ্য আছে অথবা উহান ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজির অন্য কোনো ডাটাবেজ আছে, যা বিজ্ঞানীরা এখন পর্যন্ত জানেন না।