অভিবাসী বাংলাদেশিদের ভারত ত্যাগ ‘উল্লেখযোগ্য হারে’ বেড়েছে
সীমান্তপথে ভারত ছাড়ছেন দেশটিতে অবস্থানরত বহু অবৈধ বাংলাদেশি অভিবাসী। ভারতীয় গণমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া ও জি ২৪ ঘণ্টা এমন খবর দিয়েছে। ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের বরাত দিয়ে টাইমস অব ইন্ডিয়া জানায়, স্থলপথে ভারত থেকে অবৈধ বাংলাদেশি অভিবাসীদের দেশে ফেরত যাওয়ার সংখ্যা ‘উল্লেখযোগ্য হারে’ বেড়েছে।
গতকাল শুক্রবার কলকাতায় বিএসএফের দক্ষিণবঙ্গ ফ্রন্টিয়ারের ইন্সপেক্টর-জেনারেল বি খুরাইনা বলেন, ‘দক্ষিণবঙ্গের সঙ্গে বাংলাদেশের ৯১৩ কিলোমিটারের সীমান্ত এলাকা থেকে নতুন বছরের ২৩ দিনে ২৬৮ বাংলাদেশিকে আমরা আটক করেছি, যাদের ৯০ শতাংশই ভারত থেকে বাংলাদেশে যাচ্ছিলেন।’
নতুন নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের প্রভাবে এমনটি হচ্ছে কি না সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিএসএফ কর্মকর্তা বলেন, ‘এটা হতে পারে। তবে আমরা বিশ্বাস করি, আমাদের বাড়তি তৎপরতার কারণে ভারত থেকে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করা বাংলাদেশির সংখ্যা অনেক কমে গেছে।’
বিএসএফ মহাপরিদর্শক বি খুরাইনা বলেন, ‘২০১৮ সালে বৈধ কাগজপত্র না থাকায় এক হাজার ৬৭৭ বাংলাদেশিকে আমরা আটক করি। দৈনিক হিসাবে যা প্রায় পাঁচজন। আর ২০১৯ সালে দৈনিক ছয়জন হারে দুই হাজার ১৯৪ জনকে আটক করেছি। আর ২০২০ সালের এই ২৩ দিনেই তা ২৬৮ জনে ঠেকেছে।’ এসব তথ্যের সবই দক্ষিণবঙ্গ ফ্রন্টিয়ারের, যেটি বাংলাদেশ-ভারত গোটা সীমান্তের প্রায় এক-চতুর্থাংশ।
জি ২৪ ঘণ্টা তাদের প্রতিবেদনে বলেছে, গত তিন মাসে কয়েকগুণ বেড়েছে বাংলাদেশিদের দেশে ফেরার সংখ্যা। ইন্দো-বাংলা পেট্রাপোল সীমান্তের অভিবাসন দপ্তরের হিসাবে, প্রতিদিন প্রায় চার থেকে পাঁচ হাজার বাংলাদেশি বৈধ পাসপোর্ট নিয়ে ভারত থেকে বাংলাদেশ ঢুকছেন। সীমান্তে বাংলাদেশি নাগরিকরা ভিড় জমাচ্ছেন। চোরাপথে বাংলাদেশ ঢুকতে গিয়ে গত তিন মাসে কয়েকশজন আটকও হয়েছেন। থানা, আদালত, জেল সর্বত্রই বাংলাদেশিদের দেখা যাচ্ছে।
পশ্চিমবঙ্গেরে বনগাঁ জেলা আদালতের সরকারি আইনজীবী সমীর দাস জি ২৪ ঘণ্টাকে বলেন, ‘বিএসএফের হাতে যারাই ধরা পড়েছে, তারা সবাই সীমান্ত পেরিয়ে এসেছিল। ভিনরাজ্যে ধরপাকড় শুরু হতেই এখন বাংলাদেশে দল বেঁধে ফিরতে চাইছে তারা।’
বাংলাদেশিদের দেশে ফেরার প্রবণতার কথা স্বীকার করেছেন বনগাঁ পুরসভার চেয়ারম্যান শঙ্কর আঢ্য। তিনি বলেন, ‘এ পরিস্থিতির জন্য সীমান্তে অপরাধ প্রবণতা বাড়ছে। বিজেপিশাসিত রাজ্যগুলোতে বাঙালিদের টার্গেট করে ত্রাস সৃষ্টি করা হচ্ছে।’