ফাইনালের বিতর্কিত ‘ওভার থ্রো’ নিয়ে অবশেষে মুখ খুলল আইসিসি

Looks like you've blocked notifications!

গত ১৪ জুলাই রোববার লর্ডসে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপ ফাইনালে নিউজিল্যান্ডকে সুপার ওভারে হারিয়ে প্রথমবারের মতো শিরোপা জিতেছে ইংল্যান্ড। ফাইনালে আম্পায়ারদের দেওয়া একটি সিদ্ধান্ত নিয়ে চলছে বিতর্ক। ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসির নিয়ম নিয়ে যেমন কথা হচ্ছে, তেমনি মাঠে আম্পায়ারদের ভুল সিদ্ধান্তও উঠে এসেছে আলোচনায়।

ফাইনালে আম্পায়ারের ভুল বোঝাবুঝিতে একটি অতিরিক্ত রান পেয়ে যায় ইংল্যান্ড। নির্ধারিত ৫০ ওভারের খেলার সর্বশেষ ওভারে ওভার থ্রোর কারণে যেখানে মোট ৫ রান পাওয়ার কথা, সেখানে ৬ রান পান মরগানরা। শেষ পর্যন্ত ম্যাচ গড়ায় সুপার ওভারে।

এদিকে ওভার থ্রো নিয়ে বিতর্কে আইসিসির কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যাচ্ছিল না। এবার সে প্রসঙ্গে মুখ খুলল আইসিসি।

ফক্স স্পোর্টসের এক প্রতিবেদনে ওভার থ্রো ইস্যু নিয়ে আইসিসির এক মুখপাত্র জানান, ম্যাচের আম্পায়ারদের যেকোনো সিদ্ধান্তের বিষয়ে মন্তব্য করতে অপারগ আইসিসি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই আইসিসি কর্মকর্তা এও জানান, আইসিসির তৈরি করা নিয়ম মেনে মাঠে আম্পায়াররা নিজেদের সিদ্ধান্ত নেন।

আইসিসির মুখপাত্র বলেন, ‘আম্পায়াররা মাঠে খেলার নিয়ম নিয়ে নিজেদের তাঁদের ব্যাখ্যা অনুযায়ী চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেন। আমরা নীতিগতভাবে আম্পায়ারদের কোনো সিদ্ধান্ত নিয়ে মন্তব্য করতে পারি না।’

ইংল্যান্ডের বিশ্বকাপ জয়ের পরে বিতর্ক সৃষ্টি হয় সাবেক অস্ট্রেলীয় আম্পায়ার সাইমন টফেলের একটি মন্তব্যের জেরে।

ফাইনালে নিউজিল্যান্ডের করা ২৪১ রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমে ইংল্যান্ডও নির্ধারিত ৫০ ওভারে ২৪১ রান করলে ম্যাচটি টাই হয়। ফলে সুপার ওভারে গড়ায় ফাইনাল। সুপার ওভারেও দুই দলের রান সমান হলে মূল ম্যাচে বাউন্ডারির হিসাবে বিজয়ী হয় ইংলিশরা।

তবে মূল ম্যাচে ইংল্যান্ডের ইনিংসে শেষ ওভারে এসে যে নাটকীয়তা তৈরি হয়, তা শেষ পর্যন্ত বিতর্কের জন্ম দেয়।

৪৯তম ওভারের চতুর্থ বলে দুই রান নিতে যান বেন স্টোকস ও আদিল রশিদ। এক রান সম্পন্ন হওয়ার পর মার্টিন গাপটিল বল ধরে থ্রো করেন। পরে দৌড়াতে থাকা বেন স্টোকসের ব্যাটে লেগে বলটি বাউন্ডারি হয়ে যায়। ফিল্ড আম্পায়ার কুমার ধর্মসেনা অতিরিক্ত ৪ রান এবং দৌড়ে নেওয়া ২ রান মিলিয়ে ৬ রান ইংল্যান্ডের স্কোরবোর্ডে জমা পড়েছে বলে জানান।

তবে ধর্মসেনার এ সিদ্ধান্ত ভুল ছিল বলে জানিয়েছেন সাবেক আম্পায়ার সাইমন টফেল।

পাঁচবার আইসিসির ‘বর্ষসেরা আম্পায়ার’ খেতাব জেতা টফেল বলেন, ‘আম্পায়াররা ইংল্যান্ডকে ৫ রানের পরিবর্তে ৬ রান দিয়ে ভুল রায় দিয়েছেন।’

সিডনি মর্নিংকে তিনি বলেন, ‘এটা পরিষ্কার ভুল। ইংল্যান্ডকে ৬ রান নয়, ৫ রান দেওয়া উচিত ছিল।’

আইসিসির নিয়ম (১৯.৮) অনুযায়ী, ওভার থ্রোর বাউন্ডারির ক্ষেত্রে ফিল্ডার বল ছাড়ার মুহূর্তে ব্যাটসম্যানরা পরস্পরকে ক্রস করলে তবেই তাদের ফিল্ড রান যোগ হবে ওভার-থ্রোর বাউন্ডারির সঙ্গে।

টেলিভিশন রিপ্লেতে স্পষ্ট দেখা যায়, গাপটিল বল ছোড়ার সময় স্টোকস ও আদিল রশিদ দ্বিতীয় রানের জন্য পরস্পরকে ক্রস করেননি।

ক্রিকেট আইন প্রণয়নকারী সংস্থা এমসিসির উপকমিটির অন্যতম সদস্য সাইমন টফেল আরো বলেন, ‘যেহেতু দুই রান সম্পন্ন হয়নি, তাই স্টোকসের পরিবর্তে স্ট্রাইক প্রান্তে থাকা উচিত ছিল রশিদের। তার মানে হলো পঞ্চম বলটি মোকাবিলা করতেন রশিদ। তখন দুই বলে জয়ের জন্য চার রানের প্রয়োজন হতো ইংলিশদের। থ্রো করার মুহূর্তে তারা দ্বিতীয় রান নেওয়ার সময় একে-অপরকে ক্রস করেননি। সুতরাং পাঁচ রান বরাদ্দই ছিল সঠিক এবং বেন স্টোকসের নন-স্ট্রাইক প্রান্তে থাকা উচিত ছিল।’

আম্পায়ারের ভুল নিয়ে এই অস্ট্রেলীয় আম্পায়ার বলেন, ‘অবশ্যই টিভি রিপ্লে দেখা উচিত ছিল। কারণ, মাঠে আম্পায়ারের জন্য কঠিন হলো, আপনাকে ব্যাটসম্যানদের রান সম্পন্ন হওয়া দেখতে হবে, তারপর আপনার ফোকাস থাকতে হবে ফিল্ডারের বল তোলার দিকে এবং বল ছোড়ার দিকে। ওই সময়ে ব্যাটসম্যান কোথায় ছিল, সেটাও আপনাকে দেখতে হবে।’