আপনার জিজ্ঞাসা
নারীরা ঈদের নামাজ না পড়লে কি গুনাহ হবে?
নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত, পরিবার, সমাজসহ জীবনঘনিষ্ঠ ইসলামবিষয়ক প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠান ‘আপনার জিজ্ঞাসা’। জয়নুল আবেদীন আজাদের উপস্থাপনায় এনটিভির জনপ্রিয় এ অনুষ্ঠানে দর্শকের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বিশিষ্ট আলেম ড. মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ।
বিশেষ আপনার জিজ্ঞাসার ৪৯৪তম পর্বে নারীরা ঈদের নামাজ মহিলারা না পড়লে গুনাহ হবে কি না, সে সম্পর্কে চুয়াডাঙ্গা থেকে টেলিফোনে জানতে চেয়েছেন সাজেদা খাতুন। অনুলিখনে ছিলেন জহুরা সুলতানা।
প্রশ্ন : ঈদের নামাজ মহিলা-পুরুষ সবার জন্যই ওয়াজিব। আমরা যারা মহিলা, তারা তো সব সময় মাঠে গিয়ে নামাজ আদায় করি না। এ ক্ষেত্রে আমাদের কি কোনো গুনাহ হবে?
উত্তর : প্রথম কথা হচ্ছে, আপনি যে বলেছেন নারী-পুরুষ নির্বিশেষে ওয়াজিব, এটি শুদ্ধ নয়। ঈদের জামাতে অংশগ্রহণ করা এবং জুমার নামাজে অংশগ্রহণ করা নারীদের জন্য ওয়াজিব নয়। এটাই হচ্ছে বিশুদ্ধ অভিমত। এই মাসয়ালার মধ্যে শুধুমাত্র দুজন আলেম দ্বিমত পোষণ করেছেন। বাকি সব ওলামায়ে কেরামদের ঐকমত্যে ঈদের নামাজে নারীদের অংশগ্রহণ করা ওয়াজিব নয়। সুতরাং যদি তাঁরা অংশগ্রহণ না করেন, গুনাহগার হবেন না।
কিন্তু জুমার সালাতে নারীদের অংশগ্রহণের ব্যাপারে নবী (সা.)-এর অনুমোদন রয়েছে। নবী (সা.)-এর সময় থেকে এখন পর্যন্ত মসজিদে নববীতে এবং মসজিদে হারামে নারীরা জামাতে অংশগ্রহণ করে সালাত আদায় করে থাকেন। এটি সব যুগে, সমস্ত ওলামায়ে কেরামদের সম্মতিক্রমে সাব্যস্ত হয়েছে। এটাও একেবারে প্রমাণিত বিষয়, মানে এখানেও কোনো ধরনের দ্বিমত নেই।
ঈদের জামাতে নবী (সা.) শুধু অনুমোদন দিয়েছেন তা নয়, নবী (সা.) নির্দেশ দিয়েছেন। এতে বোঝা যায়, নবী (সা.) গুরুত্ব দিয়েছেন। নবী (সা.) থেকে উম্মে আতিয়া (রা.) বর্ণনা করেছেন, ‘নবী (সা.) আমাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন যাতে করে আমরা নারীদের ঈদের জামাতে অংশগ্রহণের জন্য সহযোগিতা করি।’ তাহলে বোঝা গেল, এটি অত্যন্ত মুয়াক্কাদ, মানে তাগিদ দেওয়া হয়েছে। যদিও ওয়াজিব বা বাধ্যতামূলক করা হয়নি, কিন্তু তাগিদ দেওয়া হয়েছে।
কিন্তু নারীদের জামাতে অংশগ্রহণের কোনো ব্যবস্থাই করা হয় না। যেখানে ব্যবস্থাপনা নেই সেখানে তো আর নারীরা অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। অংশগ্রহণ করলে হয়তো তাঁর পর্দা লঙ্ঘিত হবে অথবা কোনো কারণে তিনি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। সালাত আদায়ের চেয়ে তাঁর ক্ষতিই বেশি হবে। আমরা অনুরোধ করব, যাঁরা সংশ্লিষ্ট আছেন তাঁরা যেন জামাতে নারীদের জন্য ব্যবস্থা করেন, যেহেতু নবী (সা.) গুরুত্বারোপ করেছেন, তাগিদ দিয়েছেন।