আপনার জিজ্ঞাসা
জর্দা দিয়ে পান খেলে নামাজে ইমামতি করা যাবে কি?

নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত, পরিবার, সমাজসহ জীবনঘনিষ্ঠ ইসলামবিষয়ক প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠান ‘আপনার জিজ্ঞাসা’। জয়নুল আবেদীন আজাদের উপস্থাপনায় এনটিভির জনপ্রিয় এ অনুষ্ঠানে দর্শকের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বিশিষ্ট আলেম ড.আবু বকর মুহাম্মদ জাকারিয়া।
আপনার জিজ্ঞাসার ১৯৫৩তম পর্বে সাদা, জর্দা দিয়ে পান খেয়ে নামাজে ইমামতি করা বৈধ কি না, সে সম্পর্কে বরিশাল থেকে চিঠিতে জানতে চেয়েছেন বেলায়েত হোসেন ফারুকী। অনুলিখনে ছিলেন জহুরা সুলতানা।
প্রশ্ন : তামাকজাত দ্রব্য, যেমন—সাদা পাতা, জর্দা, সিগারেট দেহের জন্য ক্ষতিকারক। কারণ, এতে হাজারো ক্ষতিকারক রাসায়নিক পদার্থ থাকে। তাই যাঁরা সাদা, জর্দা দিয়ে পান খেয়ে নামাজে ইমামতি করতে আসেন, তাঁদের ইমামতি কি বৈধ? আর ওইগুলো খাওয়ার বিষয়ে ইসলামের বিধান কী?
উত্তর : তামাক বা এ জাতীয় জিনিস শরিয়তে হারাম করা হয়েছে। কোরআনে কারিমে আল্লাহতায়ালা বলেছেন, ‘তোমরা নিজেদের হত্যা করো না, আল্লাহতায়ালা তোমাদের প্রতি অত্যন্ত দয়াদ্র।’ আবার আল্লাহতায়ালা এটিও বলেছেন, ‘তোমাদের ওপর হারাম করা হয়েছে খবিস জিনিসসমূহ।’
রাসূল (সা.) খবিস জিনিস খেয়ে, বিশেষ করে গন্ধযুক্ত জিনিস খেয়ে মসজিদে আসতে নিষেধ করেছেন। আবার কোরআনে কারিমে আল্লাহতায়ালা বেশি খরচ করতে, অতিরিক্ত খরচ করতে নিষেধ করেছেন। ‘যাঁরা অতিরিক্ত খরচ করে, তাঁরা শয়তানের ভাই এবং শয়তান আল্লাহর সঙ্গে অকৃতজ্ঞতা অবলম্বন করেছে।’
সে হিসেবে আমরা বলব যে নিষিদ্ধ জিনিস খাওয়া হলেই একটা গুনাহের কাজ করা হচ্ছে, অন্যায়ের কাজ করা হচ্ছে। তবে একটা জিনিস সত্য, রাসূল (সা.) নেককার-বদকার সবার পেছনেই নামাজ আদায় করতে বলেছেন। সে জন্য যদি তিনি এ জাতীয় জিনিস খেয়ে সালাত আদায় করেন এবং আমরা তাঁর পেছনে সালাত আদায় করি, তাহলে আমাদের সালাত শুদ্ধ হয়ে যাবে, এতে কোনো সন্দেহ নেই। আমরা যদি উনাকে নসিহত দিতে পারি যে আপনি এটা খাবেন না, যেহেতু এটা শরিয়তে হারাম করা হয়েছে, আপনি সর্বোচ্চ বলবেন যে এটা অপছন্দীয়।
এতে আমাদের সালাত হয়ে যাবে এবং তাঁরও সালাত হয়ে যাবে। কারণ গুনাহগার মানুষেরও সালাত হয়। যতক্ষণ পর্যন্ত না সে কুফরি, শিরকে, সরাসরি আকিদাগত মুনাফেকিতে লিপ্ত হয়, ততক্ষণ পর্যন্ত তাঁর সালাত হবে। এটাই রাসূল (সা.) আমাদের নির্দেশনা দিয়েছেন।