আপনার জিজ্ঞাসা
মিলাদ করা কি বেদাত?
নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত, পরিবার, সমাজসহ জীবনঘনিষ্ঠ ইসলামবিষয়ক প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠান ‘আপনার জিজ্ঞাসা’। জয়নুল আবেদীন আজাদের উপস্থাপনায় এনটিভির জনপ্রিয় এ অনুষ্ঠানে দর্শকের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বিশিষ্ট আলেম শাইখ আহমাদুল্লাহ।
আপনার জিজ্ঞাসার ৬২১তম পর্বে মিলাদ করা বেদাত কি না, সে বিষয়ে ঢাকা থেকে টেলিফোনে জানতে চেয়েছেন হেনা। অনুলিখন করেছেন জান্নাত আরা পাপিয়া।
প্রশ্ন : মিলাদ কি বেদাত নাকি মিলাদ করা যাবে? মানুষ মারা গেলে যে মিলাদ হয়, সেই সম্পর্কে জানতে চাই?
উত্তর : মৃত মানুষকে কেন্দ্র করে আমরা মিলাদের নামে আনুষ্ঠানিকতা করে থাকি অথবা এর বাইরেও আমরা মিলাদ করে থাকি। কোনো বাড়ি উদ্বোধনের শুরুতে বা কল্যাণের আশায় অথবা রুহের মাগফিরাতের জন্য, এই সমস্ত কোনো কাজে নবী করিম (সা.) তাঁর জন্মবৃত্তান্ত নিয়ে আলোচনা করার নির্দেশ করেননি। ইবাদত হতে হবে নবী করিম (সা.)-এর পদ্ধতি অনুযায়ী। আমাদের কোরআন ও হাদিস এই জন্য দেওয়া হয়েছে যেন আমরা সেখান থেকে ইবাদতের পথ এবং পদ্ধতি গ্রহণ করি।
রাসুল (সা.) নিজেও অনেক মৃত মানুষের জন্য দোয়া করেছেন, জানাজা করেছেন, দান করেছেন, তাদের পক্ষ হয়ে ওমরাহ করেছেন, সদকা করেছেন। এগুলো আমরা করতে পারি। কিন্তু কোনো মৃত মানুষকে কেন্দ্র করে চল্লিশ দিনে বা সাত দিনে মিলাদের নামে কোনো অনুষ্ঠানিকতা করার জন্য কোরআন সুন্নাহ আমাদের নির্দেশ দেয়নি। এটাকে যদি আমরা ইসলামের কাজ মনে করি, তাহলে অবশ্যই বেদাত হবে।
মিলাদ, অর্থাৎ রাসুল (সা.)-এর জন্ম নিয়ে আলোচনা করা, এটা আমরা যেকোনো সময় করতে পারি। মিলাদে আমরা রাসুল (সা.)-এর দরুদ পাঠ করি। ইসলামী শরিয়তে দরুদ পাঠ ব্যক্তিগত ইবাদত হিসেবে ধার্য করা হয়েছে।
মৃত ব্যক্তির কল্যাণে আমরা অনেক কাজ করতে পারি। তার মধ্যে একটি কাজ হলো, তার হয়ে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা, দোয়া করা। দ্বিতীয় কাজ হলো, মৃত ব্যক্তির পক্ষ হয়ে আমরা দান-সদকা করতে পারি। সবচেয়ে ভালো হয় সদকায়ে জারিয়া করা। এর পাশাপাশি যদি সাধ্য থাকে, তাহলে আমরা ওমরাহ বা হজ করতে পারি। এই কাজের সব সওয়াব তিনি লাভ করতে পারবেন।