কর্মচারীদের দ্বারা লাঞ্ছিতের অভিযোগে কুবি শিক্ষক সমিতির জিডি
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) শিক্ষক সমিতির নির্বাচন শেষে গতকাল সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) নবনির্বাচিত কমিটি উপাচার্যের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যায়। এসময় ছাত্রলীগ এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীরা শিক্ষকদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত, হেনস্তা, মারমুখী আচরণ ও প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ করেন শিক্ষক সমিতির নেতারা। এ ঘটনায় ‘শিক্ষকেরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে’ দাবি করে শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. মো. আবু তাহের বাদী হয়ে কুমিল্লার সদর দক্ষিণ মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।
জিডিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্মকর্তা পরিষদের সভাপতি ও ডেপুটি রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ জাকির হোসেন, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগের চুক্তিভিত্তিক পরিচালক মো. দেলোয়ার হোসেন, ছাত্রলীগ নেতা বাংলা বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী মো. ইমরান হোসাইনসহ নয় জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ২০-৩০ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
জিডিতে উল্লেখ করা অন্য অভিযুক্তরা হলেন: লোক প্রশাসন বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী অনুপম দাস বাধন, মার্কেটিং বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী রকিবুল হাসান রকি, নৃ-বিজ্ঞান বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী আমিনুর রহমান, ফার্মেসী বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী ইমাম হোসাইন মাসুম, বাংলা বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী রাকিব, রসায়ন বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলামসহ অজ্ঞাতনামা ২০/৩০ জন।
জিডি সূত্রে জানা যায়, গতকাল সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) শিক্ষক সমিতি ২০২৪ নির্বাচন শেষে নবনির্বাচিতরাসহ আরো ৩০/৪০ জন শিক্ষক কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে উপচার্যেরর দপ্তরে আসে। এসময় জাকির হোসেন ও মো. ইমরান হোসাইনের নেতৃত্বে এবং প্রত্যক্ষ নির্দেশে অন্য অভিযুক্তরা জোর পূর্বক উপাচার্যের কক্ষে প্রবেশ করে সেখানে উপস্থিত শিক্ষকদেরকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত ও হেনস্তা করার চেষ্টা করে। এই সময় তারা মারমুখী আচরণসহ শিক্ষকদের প্রাণনাশমূলক হুমকি ও ভয়ভীতি দেখায়। একপর্যায়ে জাকির হোসেন উপাচার্যের উপস্থিতিতেই উপস্থিত শিক্ষকদের ‘থাপ্পড় দিয়ে দাঁত ফেলে দিব’ বলে হুমকি দেয়।
জিডিতে আরও বলা হয়, তখন শিক্ষকরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিকট নিরাপত্তা চায়। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর কাজী ওমর সিদ্দীকি রানাসহ প্রক্টোরিয়াল বডির সদস্যরা উপস্থিত থাকলেও তারা শিক্ষকদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। একপর্যায়ে উপাচার্য শিক্ষকদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা না করেই নিজ বাসভবনে চলে যান বলেও জিডিতে উল্লেখ করা হয়।
জিডির বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যাপক ড. আবু তাহের জানান, উপচার্যের উপস্থিতিতেই শিক্ষকদেরকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত, হেনস্তা, মারমুখী আচরণ ও প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়। ওই ঘটনার পর নিরাপত্তাহীনতায় ভোগায় তাঁরা জিডি করেছেন।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রেজা ই এলাহী এনটিভি অনলাইনকে বলেন, এ ঘটনার সঙ্গে ছাত্রলীগ জড়িত নয়। আমরা বাহিরে ছিলাম, গণ্ডগোল শোনে আমরা সেখানে গিয়েছি।
এদিকে জিডির তথ্য নিশ্চিত করে সদর দক্ষিণ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর হোসেন ভূঁইয়া বলেন, আমরা এটিকে (জিডি) অভিযোগ হিসেবে লিপিবদ্ধ করেছি। ঘটনার তদন্ত করে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।