ফাল্গুনসহ তিন উৎসবে মাতলো শাবিপ্রবি
ঝরাপাতা আর আগুনরাঙা পলাশ জানান দিচ্ছে বসন্ত এসেছে দুয়ারে। ঋতুরাজকে বরণে প্রস্তুত মানুষ ও প্রকৃতি। বসন্তের ছোঁয়া লেগেছে সবার মনে। একই দিনে বসন্ত, বিশ্ব ভালোবাসা দিবস আর নিজেদের বিদ্যাপীঠের জন্মদিনে উৎসবের আনন্দে মেতেছে সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) শিক্ষার্থীরা। ৩৩টি বসন্ত পেরিয়ে ৩৪তম বসন্তে পা রেখেছে এ বিশ্ববিদ্যালয়।
এছাড়া একই দিনে বিদ্যার দেবী সরস্বতীকেও পূজা দিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটির সনাতন ধর্মের শিক্ষার্থীরা। সব মিলে ফাল্গুন শুরুর দিনে তিন উৎসবে মেতেছে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার।
বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) ফাল্গুনকে বরণ, বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন এবং বিদ্যার দেবী সরস্বতী পূজায় শিক্ষার্থীদের বাণী অর্চনাসহ নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন ছিল শাবিপ্রবিতে।
শাবিপ্রবি ঘুরে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের গোল চত্বর থেকে শুরু করে প্রতিটি একাডেমিক ভবনের সামনে বসন্ত বরণের বিভিন্ন স্টল, সরস্বতী পূজার মণ্ডপ সাজানো হয়েছে বাহারি রঙে। এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে সকাল থেকে ছিল নানা আয়োজন। সকাল দশটায় জাতীয় সংগীত গাওয়ার মধ্য দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের সূচনা করা হয়। পরবর্তীতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক প্রদান, শোভাযাত্রা ও কেক কাটার মধ্য দিয়ে আয়োজনের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।
বসন্ত বরণ উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ে বসন্তের উৎসবে মেতেছে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তারা। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের উদ্যোগে বসন্তকে বরণ করে নিতে নানা আয়োজন দেখা গেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘স্বপ্নোত্থান’ বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্জুনতলায় আয়োজন করেছে ‘স্বপ্নোত্থান বসন্ত উৎসব ১৪৩০’। সেখানে তারা পিঠা উৎসবের আয়োজন করে। এখান থেকে অর্জিত টাকা পুরোটাই ব্যয় করা হবে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের এক শিক্ষার্থীর ব্রেইন স্ট্রোকে আক্রান্ত মায়ের চিকিৎসায়। এছাড়াও থিয়েটার সাস্ট, কিন নিজ উদ্যোগে বসন্ত উৎসবের আয়োজন করে।
অন্যদিকে বিদ্যার দেবী সরস্বতীকে বরণ করে নিতে শিক্ষার্থী, শিক্ষকদের মাঝে আনন্দমুখর পরিবেশ দেখা যায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় পূজা উদযাপন কমিটির তথ্যমতে, বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৮ টি পূজার মণ্ডপ করা হয়েছে। মণ্ডপে মণ্ডপে শিক্ষার্থীরা পূজা আর্চনায় করেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. কবির হোসেন বলেন, শিক্ষার্থীরা যেন মাদক থেকে দূরে থাকে সেজন্য বিভিন্ন শিক্ষা সহযোগী কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছি। সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়ে যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়্যাল বডিকে সর্বদা সচেতন থাকতে বলেছি।
একই দিনে এত উৎসব নিয়ে ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী জাহিদ হাসান বলেন, বসন্তবরণ এবং একই সঙ্গে সরস্বতী পূজায় পুরো ক্যাম্পাসজুড়ে উৎসবমুখর পরিবেশ। চারদিকে সাজ সাজ রব। শাড়ি-পাঞ্জাবি পরে সবাই মিলে ক্যাম্পাসকে করে তুলেছে রঙিন। এই উৎসবকে আরো সুন্দর করে তুলার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে বসেছে নানান স্টল।