রাষ্ট্র অসাম্প্রদায়িক না হলে সভ্যতা এগোয় না
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. মুনতাসীর মামুন বলেছেন, এক হাজার বছরের ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যায় ধর্মের কারণে পৃথিবীতে যত মানুষ হত্যা হয়েছে, যুদ্ধের কারণেও তত মানুষ হত্যা হয়নি। সভ্যতা-সমাজ তখনই এগোতে পারে, যখন একটি রাষ্ট্র অসাম্প্রদায়িক হয়।
আজ শনিবার বিকেলে বাংলা একাডেমির কবি শামসুর রাহমান সেমিনার কক্ষে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ ইতিহাস সম্মিলনীর এক অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে মুনতাসীর মামুন এসব কথা বলেন।
সভায় সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিল্পী হাশেম খান। বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান ‘শেখ মুজিব থেকে বঙ্গবন্ধু এবং বাংলাদেশ রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠা’ শীর্ষক একক বক্তৃতা দেন।
ইতিহাসবিদ মুনতাসীর মামুন বলেন, রাজনীতিবিদরা নিরাপত্তা বাহিনী দিয়ে জঙ্গিবাদ দমন করতে চান। কিন্তু নিরাপত্তা বাহিনী দিয়ে কেউ আজ পর্যন্ত কোনো কিছু দমন করতে পারেনি। জঙ্গিবাদ দমনে মানস গঠনে মনোযোগী হতে হবে। ১০ রকমের শিক্ষাব্যবস্থায় পরিবর্তন আনতে হবে।
‘সরকার একদিকে বলছে, বঙ্গবন্ধুর আদর্শের কথা অন্যদিকে মাদ্রাসায় টাকা দিয়ে পড়ানো হচ্ছে যে, জিহাদ করতে হবে।’
মুনতাসীর মামুন আরো বলেন, ‘আজ যাঁরা রাজনীতি করছেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শের কথা বলছেন তাঁদের বঙ্গবন্ধুর মতো দূরদর্শিতা নেই। ক্ষমতা পাকাপোক্ত করার জন্য নয়, দেশকে বাঁচানোর জন্যই বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার পক্ষের লোকদের নিয়ে বাকশাল গঠন করেছিলেন।’
শিল্পী হাশেম খান বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকে ছাড়া আমাদের পরিচয় সম্পূর্ণ নয়। বঙ্গবন্ধু শিল্প-সাহিত্যের জন্য আমৃত্যু কাজ করে গেছেন। তিনি বিভিন্ন সময়ে শিল্পীদের সঙ্গে কথা বলতেন। বিভিন্ন বিষয়ে তাঁদের পরামর্শ নিতেন। এ জন্যই তিনি ছিলেন রাষ্ট্রনায়ক।’
অন্য বক্তারা বলেন, বঙ্গবন্ধুর সবচেয়ে বড় অবদান হচ্ছে তিনি শাসনতন্ত্রে ধর্মনিরপেক্ষতাকে রাষ্ট্রের মূলনীতি করেছিলেন। পৃথিবীতে কোনো রাষ্ট্রনায়ক স্বাধীনতা অর্জনের পরধর্ম ব্যবহার করে রাজনীতি নিষিদ্ধ করার সাহস করেননি। একমাত্র বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সেই সাহসিকতা ও দূরদর্শিতা দেখিয়েছিলেন।