‘শিক্ষা-প্রযুক্তি খাতে বরাদ্দে পিছিয়ে বাংলাদেশ’
আগামী অর্থবছরের (২০১৬-১৭) বাজেটে শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতে বরাদ্দ দেওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অনেক পিছিয়ে আছে বলে জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সেন্টার ফর বাজেট অ্যান্ড পলিসি।
আজ শুক্রবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরোনো সিনেট ভবন মিলনায়তনে আয়োজিত ‘বাজেট ২০১৬-১৭, পর্যবেক্ষণ ও মতামত’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে এ অভিমত তুলে ধরা হয়।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন সেন্টার অন বাজেট অ্যান্ড পলিসির পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. আবু ইউসুফ।
অনুষ্ঠানে বলা হয়, মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) তুলনায় শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতে বরাদ্দে এশিয়ার অনেক দেশের চেয়ে বাংলাদেশ পিছিয়ে। আগামী অর্থবছরে এ খাতে বরাদ্দ মোট বাজেটের ১৫ দশমিক ৬০ শতাংশ, যা জিডিপির ২ দশমিক ৭০ শতাংশ। অথচ এ খাতে বরাদ্দ দেওয়ার কথা ছিল জিডিপির ৬ শতাংশ, যা মোট বাজেটের ২০ শতাংশ।
ড. মো. আবু ইউসুফ বলেন, ‘আমাদের দেশে শিক্ষা খাতে বরাদ্দ জিডিপির মাত্র ২ দশমিক ৭০ শতাংশ। অথচ মালয়েশিয়ায় জিডিপির ৬ দশমিক ২০ শতাংশ, মালদ্বীপে ৮ শতাংশ, শ্রীলঙ্কায় ৬ দশমিক ২০ এবং ভারতে ৩ দশমিক ২০ শতাংশ ব্যয় হয়ে থাকে। তাই এই খাতে বরাদ্দ বাড়ানো উচিত। বরাদ্দ বাড়ানোর সঙ্গে এর যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।’
সেন্টারের পরিচালক বলেন, প্রতিবছরের মতোই বাজেট বাস্তবায়নে কিছু পরিচিত চ্যালেঞ্জ থাকবে। তাই সফল বাজেট বাস্তবায়নে প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার সবচেয়ে জরুরি। বাজেট বাস্তবায়নে সংসদীয় কমিটি ও স্থানীয় সরকারের অধিকতর সংশ্লিষ্টতা প্রয়োজন। বিশদ কর্মপরিকল্পনা অনুসারে প্রতিটি পর্যায়ের কার্যক্রমগুলো মূল্যায়ন করা দরকার।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, ‘দেশকে সামনে এগিয়ে নেওয়ার জন্য এটি উচ্চাভিলাষী বাজেট নয়। বাজেটে শিক্ষা খাতে গুরুত্ব দেওয়া আমাদের দাবি ছিল। শিক্ষা খাতে বরাদ্দ প্রাথমিক শিক্ষার মান বাড়াতে ব্যয় করতে হবে। যদি প্রাথমিকে শিক্ষার মান বাড়ানো না যায় তাহলে উচ্চ শিক্ষায় এর প্রভাব পড়বে।’ এ ছাড়া প্রযুক্তিখাতে পৃথক বরাদ্দ দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। উপাচার্য বলেন, ‘উন্নত দেশে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতকে বাজেটে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়। আমাদের দেশে সেটি সম্ভব না হলেও শিক্ষা খাতে গুরুত্ব দিয়ে বাজেট পাশ করার চেষ্টা করতে হবে।’
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের মহাসচিব অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল, বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ড. নাজনীন আহমেদ, অধ্যাপক ড. কাজী মারুফুল ইসলাম।