জাতীয় দেয়াল পত্রিকা উৎসব ও প্রতিযোগিতা

মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের মুক্তবুদ্ধিসম্পন্ন, সৎ, দক্ষ, অসাম্প্রদায়িক, বিজ্ঞানমনস্ক এবং দেশপ্রেমিক নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠতে দেয়াল পত্রিকা অনুশীলনকে একটি নিয়মিত চর্চায় নিয়ে আসতে, শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করার লক্ষ্যে ‘মুক্ত প্রকাশ, মুক্ত বিকাশ’ স্লোগান ধারণ করে শুরু হয়েছে অষ্টম জাতীয় দেয়াল পত্রিকা উৎসব ও প্রতিযোগিতা ।
গত ১৫ অক্টোবর বিকেল ৩টায় সুফিয়া কামাল জাতীয় গণগ্রন্থাগার চত্বরে জাতীয় দেয়াল পত্রিকা উৎসব ও প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন দেশবরেণ্য রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে আলোচক ছিলেন জাতীয় গণগ্রন্থাগারের মহাপরিচালক আশীষ কুমার সরকার, শিশুসাহিত্যিক আমিরুল ইসলাম এবং মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল।
দেয়াল পত্রিকার ইতিহাস বেশ প্রাচীন। ভাবের আদান-প্রদান, শিল্পভাবনার বিনিময়, বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চা ও মনোবিকাশের মাধ্যম হিসেবে দেয়াল পত্রিকা অনন্য। খ্যাতিমান কবি-সাহিত্যিক বা লেখকদের অনেকেই হাতেখড়ি নিয়েছেন দেয়াল পত্রিকার মাধ্যমে। একটা সময় দেয়াল পত্রিকার প্রচলন ছিল সর্বব্যাপী, নিভৃত গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে রাজধানীর সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ, সর্বত্র দেয়াল পত্রিকার চর্চা হতো। মাসিক, বার্ষিক, ঋতুভিত্তিক এবং ঐতিহাসিক দিবস উপলক্ষেও দেয়াল পত্রিকা প্রকাশ হতো। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন, শিশু-কিশোর সংগঠন, যুব সংগঠনসহ কিছু কিছু পরিবারেও দেয়াল পত্রিকা প্রকাশের রেওয়াজ ছিল। কিন্তু প্রযুক্তিগত উৎকর্ষ, সর্বস্তরে বাণিজ্যিকীকরণের প্রবণতা এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ প্রায় সব প্রতিষ্ঠানে অস্থিরতা ও অব্যবস্থাপনা ক্রমাগত বেড়ে চলার কারণে দেয়াল পত্রিকা চর্চা প্রায় বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর্যায়ে চলে এসেছে।ঠিক এমন সময় দেশের স্বনামধন্য মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের সহযোগিতায় ২০০৮ সালে ঢাকার বাংলা একাডেমি চত্বরে প্রথম অনুষ্ঠিত হয় জাতীয় দেয়াল পত্রিকা উৎসব ও প্রতিযোগিতার। এবারের জাতীয় দেয়াল পত্রিকা উৎসব ও প্রতিযোগিতায় সারা দেশ থেকে মোট ১৬৬টি স্কুল অংশগ্রহণ করেছে।
সুফিয়া কামাল জাতীয় গণগ্রন্থাগার চত্বরে প্রদর্শিত হচ্ছে দেয়াল পত্রিকাগুলো। অংশগ্রহণকারী পত্রিকাগুলোর লেখা ও শিল্পমান বিবেচনায় বিজ্ঞ বিচারকমণ্ডলী প্রতিযোগিতায় মূল্যায়নপূর্বক প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় ও সাধারণ স্থান সাতটিসহ মোট ১০টি পত্রিকাকে পুরস্কৃত করা হয়।