দাবানল জ্বলার আগেই দাবি মানার আহ্বান নুরের

পুনরায় ডাকসু নির্বাচন, হল প্রভোস্টের পদত্যাগ, মামলা প্রত্যাহারসহ কয়েকটি দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য এবং রোকেয়া হলের সামনে আমরণ অনশন করছেন কয়েকজন শিক্ষার্থী ও প্রার্থী। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত অনশন চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন অনশনকারীরা। তাদের এই দাবি মেনে নিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ডাকসুর নবনির্বাচিত ভিপি নুরুল হক।
অন্যদিকে শিক্ষার্থীদের রায়ের প্রতি সম্মান জানিয়ে তাদের স্বাভাবিক শিক্ষাজীবনে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আখতারুজ্জামান।
পুনরায় ডাকসু নির্বাচন, উপাচার্যের পদত্যাগসহ কয়েক দফা দাবিতে তিনদিন ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে আমরণ অনশন করছেন কয়েকজন শিক্ষার্থী।
প্রায় একই দাবিতে, বুধবার রাত থেকে রোকেয়া হলের সামনে আমরণ অনশনে বসেছেন আরো কয়েকজন শিক্ষার্থী এবং প্রার্থী। পুনরায় হল সংসদ নির্বাচন, মামলা প্রত্যাহার, রোকেয়া হলের প্রভোস্টের পদত্যাগসহ চার দফা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত অনশন চালিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দেন তারা।
অনশনকারী এক ছাত্রী বলেন, ‘আমরা চাই ভিসি স্যার এসে আমাদের সঙ্গে কথা বলুক। আমাদের দাবি মানতে হবে। আর যদি না মানে আমরা যতক্ষণ পর্যন্ত বেঁচে আছি এখান থেকে আমরা উঠব না।’
এদিকে শিক্ষার্থীদের দাবিকে যৌক্তিক আখ্যা দিয়ে তা মেনে নিতে প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আন্দোলনের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেছেন ডাকসুর নবনির্বাচিত ভিপি নুরুল হক। সংহতি প্রকাশ করেছে ছাত্রদলও।
নুরুল হক নুর বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের কাছে অনুরোধ জানাব ছাত্রদের দাবানল জ্বলে ওঠার আগেই আপনাদের যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন এবং এই হলের প্রাধ্যক্ষকে অবশ্যই পদত্যাগ করতে হবে।’
ডাকসু নির্বাচনের ছাত্রদলের প্যানেলের জিএস প্রার্থী আনিসুর রহমান খন্দকার অনিক বলেন, ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের যে প্যানেল ছিল সেই প্যানেলের পক্ষ থেকে তাদের যৌক্তিক দাবির সঙ্গে আমরা ঐক্যমত পোষণ করে, একাত্মতা পোষণ করে তাদের সঙ্গে দেখা করতে এসেছি।’
তবে পদত্যাগের দাবি নাকচ করে দিয়ে রোকেয়া হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক জিনাত হুদা জানান, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে চান তিনি।
জিনাত হুদা বলেন, ‘ছাত্রীরা যদি আমার কাছে এসে বলে যে ম্যাডাম আপনি আমাদের মামলাটি প্রত্যাহার করে নেন, তাদের তো আমার কাছে আসতে হবে।’
এদিকে, ক্যাম্পাসে শান্তি-শৃঙ্খলা যেন কোনোভাবেই নষ্ট না হয়ে সেজন্য সব শিক্ষার্থীর সহযোগিতা চেয়েছেন উপাচার্য অধ্যাপক আখতারুজ্জামান।
উপাচার্য বলেন, ‘কোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ব্যতীত শিক্ষার্থীরা যেভাবে উৎসাহ আমেজের মধ্যে যেভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছে সেটি নিঃসন্দেহে নজিরবিহীন। এবং এগুলোকে অশ্রদ্ধা করা কোনোক্রমেই কাম্য নয়।’
তবে, আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা বা অনশন ভাঙানোর কোনো উদ্যোগ নিবেন কিনা- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তর দেননি উপাচার্য।
গত ১১ মার্চ অনুষ্ঠিত ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে বিজয়ীদের অভিনন্দনপত্র পাঠিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। শিগগিরই অভিষেক অনুষ্ঠানের আয়োজনের কাজ চলছে।