দেশের সার্বিক পরিস্থিতি অত্যন্ত আশঙ্কাজনক : জয়নুল আবদিন ফারুক

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুক বলেছেন, দেশের সার্বিক পরিস্থিতি অত্যন্ত আশঙ্কাজনক। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, সরকারের দ্বারাই কি নির্বাচন বানচাল হতে যাচ্ছে? আমরা সরাসরি কিছু বলছি না, কিন্তু সন্দেহটা থেকেই যাচ্ছে।
আজ বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা আকরাম খাঁ হলে অপরাজেয় বাংলাদেশ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় জয়নুল আবদিন ফারুক এসব কথা বলেন।
জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, সন্দেহ হয় এই কারণে, আওয়ামী লীগের দোসররা এখনো সচিবালয়ে ও বিভিন্ন অধিদপ্তরে বসে আছে। অথচ তাদের বিরুদ্ধে সরকার কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। ফেব্রুয়ারির যেকোনো তারিখেই নির্বাচন হোক না কেন, নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগের এই প্রেতাত্মাদের সরিয়ে দিতে হবে।
ডাকসু নির্বাচন প্রসঙ্গে জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলে কখনো হতাশা ছিল না, এখনো নেই, সামনেও হবে না। হতাশা তাদের হয়, যারা রাজনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নয়, যাদের সংগঠন বড় নয়, যারা জনগণের জন্য কিছু করতে পারে না বা কখনো ক্ষমতায় যেতে পারেনি। তিনি আরও বলেন, জয়-পরাজয় থাকবেই। তবে যদি কেউ গণতন্ত্রকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে কিছু করে, সেটা অন্য প্রসঙ্গ। ডাকসু নির্বাচন জাতীয় নির্বাচন নয়, তাই এটি জাতীয় নির্বাচনে কোনো প্রভাব ফেলবে বলে আমি মনে করি না।
জাতীয় নির্বাচন বানচালের চেষ্টা চলছে বলেও অভিযোগ করেন বিরোধী দলের সাবেক এই চিফ হুইপ। প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনুসের উদ্দেশে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের প্রেতাত্মারা এখনো সচিবালয়ে, বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় ঘাপটি মেরে বসে আছে। একটি সুষ্ঠু নির্বাচন দেখতে চাই আমরা। আমাদের কোনো সন্দেহ নেই, কিন্তু জনগণকে নিঃসন্দেহ করতে হলে এইসব লোকদের তালিকা প্রকাশ করে নির্বাচনের আগেই তাদের অপসারণ করতে হবে। আমরা আশা করি, ৯১ সালের মতো একটি অবাধ, নিরপেক্ষ নির্বাচন আপনি উপহার দেবেন।
জয়নুল আবদিন ফারুক আরও বলেন, যে নির্বাচনের জন্য আমাদের হাজার হাজার নেতাকর্মী কারাবরণ করেছে, মায়েরা সন্তান হারিয়েছে, অসংখ্য মামলার মুখোমুখি হয়েছে, এক জেলা থেকে অন্য জেলায় গিয়ে রিকশা চালিয়ে দিন কাটিয়েছে, কবরস্থানে রাত পার করেছে, হাঁটু পানিতে দাঁড়িয়ে পুলিশের নির্যাতন থেকে বাঁচার চেষ্টা করেছে— তাদের একটাই দাবি, একটি সুষ্ঠু নির্বাচন।
ফারুক বলেন, গত ১৬ বছরে আমরা কোনো নির্বাচনে অংশ নিতে পারিনি, ভোট দিতে পারিনি। সেই ভোটের অধিকার ফিরে পেতেই আমরা ড. ইউনুসকে সমর্থন করেছি। যাতে আমার ভোট আমি নিজেই দিতে পারি—রাতে নয়, দিনে। সেই ভোটের মাধ্যমে জাতীয়তাবাদী দল ক্ষমতায় আসবে, তারেক রহমান হবেন প্রধানমন্ত্রী, দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা পাবে।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন আয়োজক সংগঠন ‘অপরাজেয় বাংলাদেশ’-এর সহ-সভাপতি আলহাজ্ব বাদল সরকার। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন সিরাজী। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ধর্মবিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জামাল, নির্বাহী কমিটির সদস্য রহিমা শিকদার, সংগঠনের সহ-সভাপতি এম এ আজাদ চয়নসহ অনেকে।