চিকিৎসকরা জুলাই আন্দোলনের অবিচ্ছেদ্য অংশ : ডা. রফিক

বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম বলেছেন, চিকিৎসকরা একইসঙ্গে রাজপথ ও হাসপাতালে জুলাই আন্দোলনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে থাকবে ইতিহাসে।
আজ শনিবার (২ আগস্ট) বিকেলে বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (পিজি হাসপাতাল) মিল্টন হলে ‘আমাদের জুলাই’ কর্তৃক আয়োজিত ‘ডক্টরস রেজিস্টেন্স ডে’ উপলক্ষে আয়োজিত ‘জুলাই চিকিৎসকদের গল্প’ শিরোনামে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন ডা. রফিক।
ডা. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বিগত জুলাই আন্দোলনসহ গত ১৬ বছরে জাতীয়তাবাদী চিকিৎসকদের অংশগ্রহণ নিয়ে বলেছেন, ক্রসফায়ারের মাধ্যমে বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার জনিসহ বিএনপির অনেক নেতাকর্মীর লাশের ছবি আন্তর্জাতিক মিডিয়াতে এসেছে চিকিৎসকদের কল্যাণে।’
ডা. রফিক আরও বলেন, ‘বিগত ১৬ বছরের আন্দোলন সংগ্রামে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের প্রতিটি অনুষ্ঠানে চিকিৎসকদের উপস্থিতি ছিল উল্লেখযোগ্য। বিগত ১৬ বছরে নির্যাতিত প্রতিটি বিএনপির নেতাকর্মীদের পাশে ছিল জাতীয়তাবাদী চিকিৎসকদের একটা বড় অংশ।’
বিগত ১৬ বছরের ফ্যাসিবাদী আন্দোলনে শহীদদের স্মরণ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘হাজারো মানুষের রক্তের বিনিময়ে এক ভয়ঙ্কর খুনি ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচারের পতনের পর নতুন এক বাংলাদেশের সূচনা হয়েছে জুলাই অভ্যুত্থানের মাধ্যমে। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে দল-মত নির্বিশেষে স্বাধীনচেতা প্রতিটা মানুষের ১৬ বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটে খুনি হাসিনার পতনের পর।’
ডা. রফিক বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট এই সরকারের দমন-নির্যাতনে খুন হয়েছে হাজারো কর্মী, গুম হয়েছেন ৬০০ এর বেশি নেতাকর্মী। লক্ষাধিক মামলা নিয়ে নিজ নিজ বাড়ি ছেড়ে ফেরারি জীবন বেছে নিয়েছেন লাখ লাখ নেতাকর্মী। তাদের আত্মত্যাগই প্রস্তুত করেছে এই জুলাই আন্দোলনের প্রেক্ষাপট, সেই ধারাবাহিকতায় আবু সাইদ-ওয়াসিম-মুগ্ধদের আত্মত্যাগে নতুন এক বাংলাদেশ পেয়েছি আমরা।’
বিএনপির স্বাস্থ্য সম্পাদক বলেন, ‘ফ্যাসিবাদী পুলিশ ও ডিবির হাতে আটক হওয়ার পূর্বে যখন আমরা শুনতে পাই, স্বাচিপের চিকিৎসকরা আহতদের চিকিৎসা দিতে গড়িমসি করছে, তখন এইখবরও পাই—স্বৈরাচারের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে নিজেদের জীবন বাজি রেখে আহতদের সেবা দিয়েছেন দেশপ্রেমিক চিকিৎসকদের একটা বড় অংশ। চিকিৎসকরা একইসঙ্গে রাজপথ ও হাসপাতালে জুলাই আন্দোলনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে থাকবে ইতিহাসে।’
এ সময় ডা. রফিকুল ইসলাম জুলাই আন্দোলনে শহীদ দুই চিকিৎসক ডা. সজীব সরকার ও ডা. কবিরুল ইসলামের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন এবং জুলাই আন্দোলনে জুলাই যোদ্ধাদের পক্ষে দাঁড়ানোর জন্য চিকিৎসকদের ধন্যবাদ জানান।
সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ ডা. মো. কবিরুল ইসলামের সহধর্মিণী শামসুন নাহার শেলী ও শহীদ ডা. সজীব সরকারের পিতা হালিম সরকার বকুল।
জুলাই চিকিৎসক সমাবেশের সংগঠক অধ্যাপক ডা. মোহাম্মাদ নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেন বিএমইউর ডেন্টাল অনুষদের ডিন ডা. সাখাওয়াত হোসেন সায়ন্থ। এতে অতিথি আলোচক ছিলেন জুলাই যোদ্ধাদের চিকিৎসক ডা. মো. আশরাফুল ইসলাম। এ সময় জুলাই যোদ্ধা ডা. জাহিদুল কবির, ডা সাকলায়েন, ডা. সায়েম মনসুর আল ফায়েজি, ডা. মাহমুদুর রহমান নোমান, ডা. জাহাঙ্গীর হোসেন, ডা. সমী আল হাসান ইমনসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠান শেষে শহীদ চিকিৎসক পরিবারের দুই সদস্য ও জুলাই আন্দোলনে অসামান্য অবদানের জন্য চিকিৎসক ও মেডিকেল শিক্ষার্থীদের হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেন আমন্ত্রিত অতিথিরা।