বরিশালে বৈষম্যবিরোধী তিন নেতার পদত্যাগ

নিজ দলকে নীতিবিচ্যুত আখ্যা দিয়ে পদত্যাগ করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের (বৈছাআ) বরিশাল জেলার মুখ্য সংগঠকসহ তিন নেতা। গতকাল রোববার (১ জুন) রাত ৮টায় বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে পদত্যাগের ঘোষণা দেন তারা।
সংবাদ সম্মেলনে তারা জানান, জুলাই অভ্যুত্থানের প্রত্যাশিত রাজনৈতিক আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে সাংঘর্ষিক হয়ে বৈছাআ একটি গণবিরোধী প্লাটফর্মে পরিণত হয়েছে। বরিশাল জেলা ও মহানগরের অধিকাংশ নেতা নানান অপকর্মে জড়িত। ৫০ ভাগ নেতাকর্মী বৈছাআ’র পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত।
তারা আরও অভিযোগ করেন, বিভিন্ন প্রকৌশল দপ্তরে গিয়ে ঠিকাদারি কাজের জন্য বৈছাআ নেতারা তদবির করছে। মুখ্য সংগঠক হাসিবুর আলম তুরানের নাম ব্যবহার করে সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মহসিন উদ্দিন চাঁদাবাজি ও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটিয়েছেন।
পদত্যাগ করা নেতারা হলেন- মুখ্য সংগঠক হাসিবুল ইসলাম তুরান, যুগ্ম আহ্বায়ক তৌহিদুল ইসলাম আবিদ এবং সদস্য তাহসিন আহমেদ রাতুল।
সংবাদ সম্মেলনে তুরান জানান, আমাদের মূল লক্ষ্য ছিল নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত, যেখানে সকল ধর্ম-বর্ণের মানুষের অন্তর্ভুক্তিমূলক অংশগ্রহণ থাকবে। কিন্তু বৈছাআ নানা অপকর্মে লিপ্ত হয়ে পড়েছে। এ কারণে জুলাই শহীদ ও আহতদের রক্তের সঙ্গে বেঈমানি না করে পদত্যাগ করাকে যৌক্তিক মনে করেছি।
তুরান আরও বলেন, একাধিকবার পদত্যাগপত্র জমা দিলেও তা বৈছাআ গ্রহণ করেনি। বরং আমার সামনেই পদত্যাগপত্র ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে। এর প্রমাণ আমার কাছে রয়েছে। তাই আজ থেকে বৈছাআ’র সকল পদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিচ্ছি।
বৈছাআ বরিশাল জেলা শাখার সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মহসিন উদ্দিন পদত্যাগী নেতাদের অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করে বলেন, মুখ্য সংগঠক তুরান নয়, স্থানীয় কর্মী তুরানের নাম ব্যবহার করা হয়েছে। আমরা জুলাই অভ্যুত্থান থেকে কৌশল হিসেবে ছদ্মনাম ব্যবহার করে থাকি। পুলিশ কমিশনার ঘটনার তদন্ত করেছেন। তাতে চাঁদাবাজির অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। আমার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার ক্ষতিগ্রস্ত করতে এসব অভিযোগ তোলা হয়েছে।
বৈছাআ বরিশাল জেলা আহ্বায়ক সাব্বির হোসেন সোহাগ বলেন, চাঁদাবাজির অভিযোগ ভিত্তিহীন। আমরা এখন পর্যন্ত কেউ তদবির করিনি, তবে কেউ গোপনে করে থাকলে সেটা ভিন্ন কথা। তারা পদত্যাগ করবে তা আমাকে জানায়নি। যদি সংগঠনে কোনো অনিয়ম থাকত, তারা সেটা নিয়ে সরাসরি প্রতিবাদ করতে পারতো। কিন্তু তা না করে এখন সাধারণ কিছু অভিযোগের কথা বলে সংগঠন ছেড়ে যাচ্ছে। মূলত, সংগঠন তাদের ভালো লাগছে না, তাই এসব অভিযোগ এনে চলে গেছে। তাদের অভিযোগ ভিত্তিহীন।