চারদিন ধরে বন্ধ জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল

জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে (এনআইও) চিকিৎসা সেবা গত চারদিন ধরে বন্ধ রয়েছে।
আজ শনিবার (৩১ মে) জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান হাসপাতালে সরেজমিনে দেখা যায়, হাসপাতালটির প্রধান দুটি ফটক বন্ধ। ভেতরে অলস সময় কাটাচ্ছে পুলিশ। সকাল থেকে হাসপাতালটিতে আসা রোগী ও তাদের স্বজনেরা সেবা না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন।
হাসপাতালটির সব সেবা কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও ভেতরে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত শতাধিক যোদ্ধা অবস্থান করছেন। শুধু তাদের রান্নার জন্য দু-একজন লোক আছে। এর বাইরে হাসপাতালের কোনো স্টাফ নেই।
একাধিক ছাত্র সমন্বয়ক বলেন, তারা হাসপাতালেই আছেন। তবে সব ধরনের সেবা কার্যক্রম বন্ধ। তারা দফায় দফায় কর্তৃপক্ষকে সময় বেঁধে দিচ্ছেন।
গত কয়েকদিন বেশ কয়েকজন উপদেষ্টা, সচিব, হাসপাতাল প্রতিনিধি, ছাত্রপ্রতিনিধিসহ বৈঠক করেও সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া যায়নি।
সর্বশেষ গত বুধবার (২৮ মে) কর্মস্থলের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবিতে চিকিৎসক ও স্টাফদের কর্মবিরতি কর্মসূচিতে সৃষ্ট হট্টগোলের মধ্যেই হামলা হয়। এতে অন্তত ১৫ জন চিকিৎসক ও স্টাফ আহত হন। সেনাবাহিনী এসে চিকিৎসক-স্টাফদের উদ্ধার করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনলেও বন্ধ রয়েছে হাসপাতালের স্বাভাবিক কার্যক্রম। দৈনিক সেবাবঞ্চিত হচ্ছে ৫ হাজার নাগরিক।
আজ শনিবার (৩১ মে) সকালে আরিফ নামের একজন এসেছেন চোখ দেখাতে। প্রধান ফটকের সামনে কিছুক্ষণ থেকে চলে গেছেন সেবা না পেয়ে।
ময়নুল খান নামে একজন ফলোআপ চিকিৎসা নিতে এসে অপেক্ষায় আছেন কখন সেবা চালু হবে। তার ভেতর এক ধরনের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ দেখা যায়।
গত চারদিনের নানা প্রচেষ্টাতেও চালু হয়নি দেশের একমাত্র সরকারি এ চক্ষুবিজ্ঞান হাসপাতালের কার্যক্রম। চিকিৎসক-স্টাফরা নিরাপত্তার অভাবে হাসপাতালে আসছেন না বলে জানান হাসপাতালের একাধিক চিকিৎসক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী।
এর আগে জুলাই ফাউন্ডেশনের সিইওর অনুরোধে তিনজনকে শুক্রবার (২৩ মে) চক্ষুবিজ্ঞান হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। রোববার (২৫ মে) জুলাই ফাউন্ডেশনের সিইও ও হাসপাতালের পরিচালকের সঙ্গে পূর্বনির্ধারিত সভা চলাকালীন আন্দোলনে আহতদের বিষপানে আত্মহত্যাচেষ্টার অভিযোগ ওঠে। তাদের রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতাল থেকে তাদের অবস্থা স্বাভাবিক ও সুস্থ বলে জানানো হয়।
পরদিন সোমবার (২৬ মে) দিনগত রাতে তাদের একজন হারপিক খেয়েছে বলে প্রচার হয়। বলা হয়, তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সোহরাওয়ার্দীতে ভর্তি ও তিনজনসহ জুলাই যোদ্ধারা মঙ্গলবার (২৭ মে) এনআইও পরিচালককে অবরুদ্ধ করেন। পরিচালকসহ চিকিৎসকদের হেনস্তা করেন। পরে সেনাবাহিনী গিয়ে পরিচালকসহ চিকিৎসকদের উদ্ধার করেন।
এসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পরদিন বুধবার (২৮ মে) কর্মস্থলে নিরাপত্তার দাবিতে কর্মবিরতি করে চিকিৎসক, নার্স ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। জরুরি বিভাগ ছাড়া নিয়মিত অস্ত্রোপচার থেকে শুরু করে সব চিকিৎসাসেবা বন্ধ রয়েছে।
এ বিষয়ে হাসপাতালের পরিচালক খায়ের আহমেদ চৌধুরী এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আমি এখন ছুটিতে আছি অসুস্থতার কারণে। আপনি ভারপ্রাপ্ত পরিচালকের সঙ্গে কথা বলেন।’
দায়িত্ব থাকা পরিচালক (ইনচার্জ) ডা. জানে আলমকে কল দিলে তিনি সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে কল কেটে দেন।