‘বিগত তিনটি নির্বাচন সুষ্ঠু না হওয়ায় ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল’

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক সংসদ সদস্য ড. হামিদুর রহমান আজাদ বলেছেন, বিগত ১৫ বছরের তিনটি নির্বাচন সুষ্ঠু না হওয়ায় ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। নির্বাচনই পারে জনগণের প্রতিনিধি নির্বাচন করতে। জনগণের প্রতিনিধি নির্বাচন করার সর্বোৎকৃষ্ট মাধ্যম হলো একটি সঠিক নির্বাচন।
আজ শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) সকালে ফরিদপুর মুসলিম মিশনের কনফারেন্স রুমে লিডারশিপ ট্রেনিং অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
হামিদুর রহমান আজাদ বলেন, আগামী নির্বাচনে এদেশের মানুষ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে প্রতিনিধি নির্বাচন করবে। এই নির্বাচনে জামায়াতের প্রার্থীকে বিজয়ী করার লক্ষ্যে একটি কার্যকরী ভূমিকা রাখার জন্য প্রার্থীসহ সকলকে যথাযথ ভূমিকা রাখতে হবে। সেক্ষেত্রে প্রার্থী হলো প্রাণ। প্রার্থীর প্রাণচঞ্চল্য এবং পরিচালনা কমিটির ভূমিকা পালনের মাধ্যমেই কেবল বিজয়ী হওয়া সম্ভব। সকলে যথাযথ ভূমিকা পালন করলেই কেবল আল্লাহর সাহায্যের মাধ্যমে বিজয়ী হওয়া সম্ভব।
নির্বাচন হলো সেই পদ্ধতি যার মাধ্যমে জনগণ তাদের পছন্দমতো প্রতিনিধি বাছাই করতে পারে উল্লেখ করে জামায়াতের এই নেতা বলেন, ‘প্রতিনিধি বাছাই যদি সঠিক না হয় তাহলে গণতন্ত্র ধ্বংস হবে এবং ফ্যাসিবাদ কায়েম হবে। বিগত নির্বাচনে আমরা কেয়ারটেকার সরকারের জন্য আন্দোলন করেছি। ২০১৪ সালের নির্বাচনে ১৫৩ জন প্রতিনিধি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হয়। এভাবেই এদেশে ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠিত হয়। ২০১৮ সালের নির্বাচন ছিল রাতের ভোটের নির্বাচন। যা পৃথিবীর ইতিহাসে অভিনব। সর্বশেষ ২০২৪ এ নির্বাচন ছিল আমি তুমি আর ডামির ভাগাভাগির নির্বাচন। এজন্য আমরা আন্দোলন করেছি। জনগণ উৎকণ্ঠিত ছিল ভবিষ্যতে নির্বাচন ব্যবস্থা নিয়ে। এরপর ছাত্রদের কোটা সংস্কার আন্দোলনের পরিণতিতে সরকার পতনের আন্দোলন শুরু হয়। দেশের সব শ্রেণীর মানুষ এই আন্দোলনে জীবন দিয়ে, আহত হয়ে ফ্যাসিবাদকে বিদায় করে।’
‘বর্তমানে এদেশের জনগণের মধ্যে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়েছে। এ লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সংস্কার ফ্যাসিবাদের বিচারসহ সুষ্ঠু নির্বাচনের জন আকাঙ্ক্ষার সাথে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীও সহমত পোষণ করে।’
গত ৫৪ বছরের জঞ্জাল মুক্ত করে আগামীতে একটি জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে উল্লেখ করে জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। এজন্য নির্বাচন কমিশনকে সকল স্টেক হোল্ডারদের বিশেষ করে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলোচনা করতে হবে। পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোরও ভূমিকা পালন করতে হবে। অন্যথায় আমরা আবারো ফ্যাসিবাদের দিকে ফিরে যেতে পারি। এজন্য প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ নিয়ে আমাদেরকে প্রস্তুত হতে হবে, সাথে সাথে মাঠের অভিজ্ঞতাও কাজে লাগাতে হবে।
মানব সম্পদ বিভাগ ফরিদপুর অঞ্চল কর্তৃক আয়োজিত উক্ত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সহকারী অঞ্চলের মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন। সম্পূর্ণ অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনায় করেন ফরিদপুর জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা মো. বদর উদ্দিন।