চার বছরেও শেষ হয়নি ভবন নির্মাণ, ব্যাহত হচ্ছে পাঠদান
মুন্সীগঞ্জের সিরাজদীখানে ঠিকাদারের গাফিলতিতে চার বছরেও শেষ হয়নি লতব্দী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণকাজ। পুরাতন ভবন ও কক্ষ সংকটের কারণে ব্যাহত হচ্ছে পাঠদান। এতে চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা।
আজ বুধবার (১৫ মে) সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের পুরোনো ভবনে গাদাগাদি করে শিক্ষার্থীদের ক্লাস নেওয়া হচ্ছে। স্কুলের মাঠে ও ভবনের কক্ষের সামনে পড়ে আছে নির্মাণ সামগ্রী।
বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দাবি, এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগসহ নানাভাবে যোগাযোগ করেও মেলেনি কোনো সুফল।
বিদ্যালয় ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, লতব্দী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী রয়েছে ৩৫০ জন। বিদ্যালয়ের পুরাতন ভবনটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়ায় ও কক্ষ সংকট থাকায় গত ২০১৯-২০ অর্থবছরে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকে একটি ভবন নির্মাণ করতে বলা হয়। এ জন্য ৮৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। এরপর টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ করে কার্যাদেশ দেওয়া হয়। ঢাকার মেসার্স হেদায়েত উল্লাহ অ্যান্ড কোং নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সেই ভবন নির্মাণকাজের দায়িত্ব পায়। তখন প্রতিষ্ঠানটি ভবন নির্মাণকাজ শুরু করার চার বছর অতিবাহিত হয়ে এখনও অসম্পন্ন রয়ে গেছে। ভবন নির্মাণে এত দীর্ঘ সময় লাগায় ভোগান্তিতে পড়েছেন ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।
বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বলে, ‘এত দিনেও নতুন ভবনের নির্মাণকাজ শেষ হয়নি। এ কারণে পুরাতন ভবনে গাদাগাদি করে ক্লাস করতে হচ্ছে। প্রচণ্ড গরমে শ্রেণিকক্ষে গাদাগাদি করে ক্লাস করতে আমাদের অনেক কষ্ট হয়। এতে আমাদের পাশাপাশি স্যারদেরও অনেক সমস্যা হচ্ছে। তাই দ্রুতই নতুন ভবনের নির্মাণকাজ শেষ করার দাবি জানাচ্ছি।’
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোক্তার হোসেন বলেন, ‘আমি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে ভবন নির্মাণকাজ দ্রুত শেষ করার জন্য বারবার অনুরোধ করছি। জরাজীর্ণ পুরাতন ভবন আর টিনশেড কক্ষে ক্লাস নিতে আমাদের অনেক কষ্ট হচ্ছে। এ ছাড়া সেখানে দুর্ঘটনার আশঙ্কাও রয়েছে। আর মাঠে নির্মাণ সামগ্রী ফেলে রাখায় শিক্ষার্থীরা সেখানে খেলাধুলা করতে পারছে না।’
বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মাহাবুব হোসেন রন্টু বলেন, চার বছর আগে বিদ্যালয়ের কাজ ধরে এখনও অসম্পূর্ণ করে রেখেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এ বিষয়ে নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছে একাধিকবার লিখিত ও মৌখিক অভিযোগ করেও কোনো সহযোগিতা পাওয়া যায়নি। এ ছাড়া ভবন নির্মাণে একেবারে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করাসহ শিডিউলের ড্রয়িং বহিরভূতভাবে ভবন নির্মাণকাজটি করা হচ্ছে।
এদিকে বিষয়টি নিয়ে জানতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স হেদায়েত উল্লাহ অ্যান্ড কোংয়ের সঙ্গে একাধিক বার চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
সিরাজদীখান উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, ‘প্রয়োজনীয় শ্রেণিকক্ষের অভাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। আমার জোর দাবি, সরকারের নির্দেশনা মোতাবেক নির্মাণকাজ শেষ করে দ্রুত ভবনটি হস্তান্তর করা হোক।’