ফরিদপুরে গণপিটুনিতে দুই নির্মাণ শ্রমিক নিহত
ফরিদপুরের মধুখালীর ডুমাইন ইউনিয়নের পঞ্চপল্লীতে মন্দিরে অগ্নিসংযোগ করার অভিযোগে গণপিটুনিতে দুই নির্মাণ শ্রমিক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় পুরো এলাকায় আতঙ্ক ও উত্তেজনা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ওই এলাকার অতিরিক্ত র্যাব ও পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত নির্মাণ শ্রমিকরা হলেন—মধুখালী উপজেলার নওয়াপাড়া ইউনিয়নের ঘোপেরঘাট গ্রামের শাহজাহান খানের ছেলে আশরাফুল (২১) ও তার ভাই আশাদুল (১৫)। গণপিটুনিতে গুরুতর আহত হওয়ার পর তাদের উদ্ধার করে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে বৃহস্পতিবার রাতে তাদের মৃত্যু হয়। জেলার কোতয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসানুজ্জামান তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ওই এলাকার একটি কালী মন্দিরে আগুন দেওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে নির্মাণ শ্রমিকদের গণপিটুনিতে দেয় এলাকাবাসী। পরে মুমূর্ষু অবস্থায় তাদের নির্মাণাধীন একটি স্কুল ভবনের কক্ষে হাত-পা বেঁধে মেঝেতে ফেলে জিম্মি করে রাখে বিক্ষুব্ধ জনতা। খবর পেয়ে সন্ধ্যার পর প্রথমে মধুখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও ওসির নেতৃত্বে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। পরিস্থিতি বেগতিক হলে ফরিদপুর ও রাজবাড়ী থেকে অতিরিক্ত পুলিশ সেখানে আনা হয়। এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ফাঁকা গুলিবর্ষণ করে। খবর পেয়ে ফরিদপুর জেলা প্রশাসক কামরুল আহসান তালুকদার ও পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ মোর্শেদ আলম ঘটনাস্থলে যান। প্রায় ছয় ঘণ্টারও বেশি সময় পর আহতদের উদ্ধার করে মুমূর্ষু অবস্থায় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে দুই নির্মাণ শ্রমিকের মৃত্যু হয়।
ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক কামরুল আহসান তালুকদার বলেন, ‘পঞ্চপল্লী গ্রামে একটি কালী মন্দিরে আগুন দেওয়ার খবরে ঘটনার সূত্রপাত। গ্রামবাসীর সন্দেহ এখানে একটি নির্মাণাধীন প্রাইমারি স্কুলের নির্মাণ শ্রমিকরা আগুন দিয়েছেন। তারা ওই শ্রমিকদের ওপর হামলা করে গুরুতর আহত করে। তাদের উদ্ধার করে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।’
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পঞ্চপল্লী গ্রামে অতিরিক্ত পুলিশ ও র্যাব সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে জানিয়ে জেলা প্রশাসক বলেন, ‘এখানে মোতায়েনের জন্য চার প্লাটুন বিজিবি চাওয়া হয়েছে। মধুখালী ছাড়াও শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বিজিবি মোতায়েন করা হবে। কাউকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের সুযোগ দেওয়া হবে না।’