গাজীপুরে ছিনতাইকারীদের হাতে ফল ব্যবসায়ী খুন, গ্রেপ্তার ৫
গাজীপুরে ছিনতাইকারীদের হাতে ফল ব্যবসায়ী মোমেন শেখ (৫০) নিহতের ঘটনায় জড়িত মূলহোতাসহ পাঁচ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। গতকাল শনিবার রাতে রাজধানীর দক্ষিণখান ও গাজীপুরের পুবাইল এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
আজ রোববার (২৩ জুলাই) রাজধানীর কারওয়ানবাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাব-১ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. মোশতাক আহমেদ। এ সময় তাদের কাছ থেকে হত্যায় ব্যবহৃত দুটি লোহার রড, একটি লোহার ধারালো ছেনি, একটি লাঠি, একটি পিকআপ ভ্যান, আসামিদের ছয়টি মোবাইল ফোন এবং নিহতের ব্যবহৃত একটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়।
র্যাবের হাতে গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন—হত্যাকাণ্ডের মূল হোতা আরজু মিয়া (৩৪), মো. সোহান (১৮), নবী হোসেন (২৯), মো. রাজিব মিয়া (২১) ও মো. শাকিল আহম্মেদ (১৮)।
লে. কর্নেল মো. মোশতাক আহমেদ জানান, গত ১৪ জুলাই ভোরে নিহত ফল ব্যবসায়ী মোমেন শেখ ফল কেনার জন্য ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় গাজীপুর চৌরাস্তা এলাকার উদ্দেশে রওনা করেন। পরবর্তীতে গাজীপুর জেলার হাড়িনাল হানকাটা ব্রিজের ওপর পৌঁছালে অজ্ঞাত পিকআপে পাঁচ থেকে ছয় জন ছিনতাইকারী অটোরিকশার গতিরোধ করে নিহত মোমেন শেখের কাছে থাকা ফল কেনার টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় ব্যবসায়ী মোমেন শেখ বাধা দিলে ছিনতাইকারীদের সঙ্গে তার ধস্তাধস্তি হয়। একপর্যায়ে মোমেন শেখের বুকে লোহার রড দিয়ে আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করে ছিনতাইকারীরা। মোমেন শেখ ঘটনাস্থলে মারা গেলে ছিনতাইকারীরা টাকা-পয়সা ও মোবাইল ফোন নিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।
ওই ঘটনায় মোমেন শেখের স্ত্রী মোছা. সেলিনা আক্তার বাদী হয়ে গাজীপুর মহানগর পুলিশের (জিএমপি) গাজীপুর সদর থানায় অজ্ঞাতনামা তিন থেকে চার জনকে আসামি করে একটি ছিনতাইসহ হত্যা মামলা দায়ের করেন।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ঘটনায় জড়িতদের ধরতে র্যাব-১ এর আভিযানিক দল ছায়া তদন্ত শুরু করে এবং আসামি গ্রেপ্তারের জন্য গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ায়। এরই ধারাবাহিকতায় তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। র্যাবের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা মোমেন শেখকে হত্যার কথা স্বীকার করে এবং এই হত্যার লোমহর্ষক ঘটনার বর্ণনা দেয়।
আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে র্যাব-১-এর অধিনায়ক জানান, তারা পেশাদার ছিনতাইকারী দলের সক্রিয় সদস্য। এ হত্যাকাণ্ডের মূল হোতা আরজু মিয়ার ভাষ্যমতে তারা ছিনতাইয়ের উদ্দেশে গত ১৪ জুলাই ভোরে বাসা থেকে বের হয়ে অবস্থান নেয়। এ সময় মোমেন শেখের অটোরিকশাটিকে দেখে তারা ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করে। আসামি আরজু মিয়ার নামে একটি এবং নবী হোসেনের নামে চারটি ডাকাতি ও চুরির মামলা রয়েছে। গ্রেপ্তার আসামিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান র্যাবের এই কর্মকর্তা।