সুনামগঞ্জে ঝড়ে লণ্ডভণ্ড ৫০০ বসতবাড়ি, আহত ৩০

প্রচণ্ড ঝড়ে সুনামগঞ্জ সদর, বিশ্বম্ভরপুর ও তাহিরপুরের প্রায় ৫০০ ঘরবাড়ি লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে। এ সময় ঘরের নিচে চাপা পড়ে ৩০ জন আহত হয়েছে।
এলাকাবাসী ও স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, গত রোববার রাত আড়াইটার দিকে সুনামগঞ্জের সদর, বিশ্বম্ভরপুর ও তাহিরপুর উপজেলার ওপর দিয়ে প্রচণ্ড বেগে ঝড় বয়ে যায়। এতে বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার পলাশ ইউনিয়নের কৃষ্ণনগর, মুক্তিখলা, নতুনপাড়া, রসুলপুর, লালারগাঁও, মজুমদারী, ধরেরপাড়, দক্ষিণ বাদাঘাট ইউনিয়নের বাঘমারা, ভাটিপাড়া, দুর্গাপুর, ধরেরকান্দা, পুরান বাঘমারা, বজ্রনাথপুর, সোনাপুর, ফতেপুর ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর, বিশ্বম্ভরপুর গোপালপুর গ্রামের ২৫০ ঘরবাড়ি ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ঝড়ের সময় আহত বাঘমারা গ্রামের তিনজনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
কৃষ্ণনগর গ্রামের বাসিন্দা স্বপন কুমার বর্মণ জানান, তাঁর বসতঘরসহ তিনটি ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। একই সঙ্গে ঝড়ে ভেঙে পড়েছে ১৬টি গাছ।
লক্ষ্মীপুর গ্রামের মিনতি রানী জানান, তাঁর বসতঘরটি ঝড়ে পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। এখন পরিবারের লোকদের নিয়ে খোলা আকাশের নিচে আশ্রয় নিয়েছেন। এ ছাড়া ঝড়ে বিশ্বম্ভরপুর মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রাবাসটি পুরোপুরি বিধস্ত হয়ে গেছে।
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার মোল্লাপাড়া ইউনিয়নের শান্তিগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় ও পাশে থাকা একটি মাদ্রাসার টিনশেড ভবন ভেঙে পড়েছে। একই ইউনিয়নের ইছাগড়ি, জগজীবনপুর, আবদুল্লাহপুর, নোয়াগাঁও, নুরুল্লাহ গ্রামের শতাধিক ঘরবাড়ি বিধস্ত হয়েছে। ঝড়ের সময় জগজীবনপুর, ইছাগড়ি গ্রামের পাঁচজন আহত হয়েছেন।
তাহিরপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. কামরুজ্জামান জানান, তাঁর উপজেলার বড়ধল উত্তর, বড়ধল দক্ষিণ ও বাদাঘাট ইউনিয়নে ঝড়ে দুই শতাধিক কাঁচা ও আধাপাকা ঘরবাড়ি বিধস্ত হয়েছে। ঝড়ের সময় নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার সময় এসব গ্রামের কয়েকজন নানাভাবে আঘাত পেয়েছেন।
বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) ওয়ালী ইসলাম জানান, বিশ্বম্ভরপুরে দুই থেকে আড়াই শ ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। একই সঙ্গে গাছপালারও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক শেখ রফিকুল ইসলাম বলেছেন, ঝড়ে ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করে ত্রাণ সহায়তা পৌঁছে দিতে বলা হয়েছে।