মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি নিয়ে আজও জাগ্রত চৌরঙ্গী

গন্তব্য ছিল জয়দেবপুর রেলস্টেশন। গাজীপুরে চৌরাস্তায় পৌঁছাতেই চোখে পড়ল রাস্তার ঠিক মাঝখানে (সড়ক দ্বীপে) সগৌরবে দাঁড়িয়ে আছে এক যোদ্ধা। চারদিক থেকে বাস-গাড়ির একটানা হর্ন মানুষের ব্যস্ততা, আসা-যাওয়া, শোরগোল। এতসবের মধ্যেই ইতিহাসকে বুকে ধরে দাঁড়িয়ে আছে সেই যোদ্ধা।
হাঁটতে হাঁটতে দেখছিলাম উদ্ধত রাইফেল আর গ্রেনেড হাতে দাঁড়িয়ে থাকা সেই যোদ্ধাকে। যার নাম জাগ্রত চৌরঙ্গী। মুক্তিযোদ্ধার প্রতীকী ভাস্কর্য এই জাগ্রত চৌরঙ্গী।
মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মরণ করে সারা দেশেই দেখতে পাওয়া যায় এমন নানা স্মৃতিভাস্কর্য। তবে এই ভাস্কর্যটির গুরুত্ব একটু ভিন্ন রকম মনে হলো। প্রথম সব কিছুর প্রতিই যেন মানুষের আগ্রহ-আবেগটা একটু ভিন্ন মাত্রায় প্রকাশ হয়। এই ভাস্কর্যটি দেখার পরও তেমনই মনে হলো। গাজীপুর চৌরাস্তায় অবস্থিত জাগ্রত চৌরঙ্গী নামের এই ভাস্কর্যটিই আমাদের মুক্তিযুদ্ধের প্রথম ভাস্কর্য হিসেবে স্বীকৃত।
১৯৭৩ সালে ভাস্কর্যটি নির্মাণ করেন ভাস্কর আবদুর রাজ্জাক। জয়দেবপুর রাজবাড়িতে অবস্থানরত তৎকালীন ১৬ ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্টের অধিনায়ক সেনাবাহিনীর সাবেক মেজর জেনারেল আমিন আহমদ চৌধুরীর তত্ত্বাবধানে নির্মাণ করা হয় ভাস্কর্যটি।
চৌরাস্তার মোড়ে সড়ক দ্বীপে অবস্থিত এই ভাস্কর্যর দিকে তাকালে চোখে পড়বে এর নিচে খোদাই করে লেখা আছে কিছু নাম। এই নামগুলো ১৬ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের শহীদ সৈনিকদের। এখানে ১৬ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের ৩ নম্বর সেক্টরের ১০০ জন এবং ১১ নম্বর সেক্টরের ১০৭ জন শহীদ সৈনিক ও মুক্তিযোদ্ধার নাম লেখা আছে।
জাগ্রত চৌরঙ্গীর উচ্চতা বেদিসহ ৪২ ফুট ২ ইঞ্চি। কংক্রিট, গ্রে সিমেন্ট, হোয়াইট সিমেন্ট ইত্যাদি দিয়ে ঢালাই করে নির্মাণ করা হয়েছে এই ভাস্কর্য।