নির্বিঘ্নে ভোটদান নিশ্চিত করা হবে : জাবেদ আলী
আসন্ন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোটাররা যেন নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারে তা নিশ্চিত করা হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) জাবেদ আলী। সেই সঙ্গে সব প্রার্থীকে নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে চলতেও আহ্বান জানান তিনি।
আজ বৃহস্পতিবার নির্বাচনকে সামনে রেখে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসনের সভা কক্ষে আচরণবিধি, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিসহ বিভিন্ন বিষয়ে মেয়র পদপ্রার্থী ও প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা ও মতবিনিময় করেন জাবেদ আলী। এ সময় সাত মেয়র পদপ্রার্থী তাঁদের মতামত তুলে ধরেন। প্রার্থীদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবও দেন নির্বাচন কমিশনার।
জাবেদ আলী জানান, প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে কঠোর নিরাপত্তার বেষ্টনি থাকবে। ভোটগ্রহণ, গণনা ও ফলাফল প্রকাশেও যথাযথ স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা হবে।
নিজের ব্ক্তব্যে জাবেদ আলী আরো বলেন, ‘এই দেশের মালিক জনগণ, সংবিধানের ৭ ধারায় লেখা আছে। আপনারা জনগণ সব প্রতিরোধ করবেন। আমাদের আগে দুর্নাম ছিল। এখন আর এতটুকু যাওয়ার আগে আপনারা সম্মান করেন বা না করেন…এটুকু আমি বলে যেতে পারি আজ থেকে দু-তিন বছর পরে এই মিডিয়াই বলবে যে আগের কমিশন কেমন ছিল।’
সুষ্ঠুভাবে সবার সহযোগিতায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে আশ্বাস দেন এই নির্বাচন কমিশনার। তিনি বলেন, ‘কোনো কর্ম যদি সুসম্পন্নের কোনো বাধা-বিঘ্ন সৃষ্টি হয়, আইনি প্রক্রিয়ায় সেটা সমাধান করা হবে।’ নিজেদের প্রতি দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করেছেন বলেও উল্লেখ করেন তিনি। যদি কোনো ভোটার নিরাপত্তার অভাব মনে করেন তাহলে বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীকে জানাতে বলেন জাবেদ আলী। নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের বিষয়টি নিশ্চিত না করলেও তা কমিশনের বিবেচনায় রয়েছে বলেও জানান এই কমিশনার।
জাবেদ আলীর সূচনা বক্তব্যের পর বক্তব্য দেন রিটার্নিং কর্মকর্তা নূরুজ্জামান তালুকদার। এরপর একে একে বক্তব্য দেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির মেয়র পদপ্রার্থী অ্যাডভোকেট মাহবুবুর রহমান ইসমাইল, ইসলামী ঐক্যজোটের মুফতি এজহারুল হক, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মাওলানা মাছুম বিল্লাহ, এলডিপির কামাল প্রধান, বিএনপির অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান ও আওয়ামী লীগের ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী।
এসব প্রার্থীর বক্তব্যে উঠে আসে ভোটাররা কেন্দ্রে নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারবেন কি না সে প্রশ্ন। এ ছাড়া সেনাবাহিনী মোতায়েনের দাবি, পোস্টার ছিঁড়ে ফেলার অভিযোগ, ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রের কথা উঠে আসে তাঁদের বক্তব্যে।
নিজের বক্তব্যে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সেনাবাহিনী মোতায়েনের দাবি জানান বিএনপির প্রার্থী সাখাওয়াত হোসেন। নির্বাচনের জন্য আস্থার পরিবেশ তৈরি করতে কমিশনের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। সরকার এবং নির্বাচন কমিশন মিলে নির্বাচনকে গ্রহণযোগ্য করতে সব পদক্ষেপ নেবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি। বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে তিনি ও তাঁর দল এখন পর্যন্ত আশ্বস্ত বলেও জানান এই প্রার্থী। তবে তিনি বলেন, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড এখনো তৈরি হয়নি। সিটি করপোরেশন এলাকায় এখনো অনেক লাইসেন্স করা আগ্নেয়াস্ত্র রয়েছে, যা নির্বাচনের আগে জমা নেওয়ার ব্যবস্থা করতে অনুরোধ জানান তিনি।
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্রথম মেয়র ও এবার আওয়ামী লীগের প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভীও সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি জানান। তিনি বলেন, ‘আমি আপনার কাছে অনুরোধ করব একদম স্বচ্ছ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করেন। মানুষ যাতে ভোট দিতে পারে সে নির্বাচনে যে জিতবে সেই ফলাফলটা মেনে নেব আমরা সবাই মিলে এ রকম মানসিকতাই যেন আমাদের থাকে।’ এ সময় আচরণবিধি মেনে চলার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। এবারও সবাইকে নিয়ে জয় পাবেন বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। প্রশাসনের কাছ থেকে কোনো ধরনের বিশেষ সুবিধা চান না বলেও উল্লেখ করেন তিনি। তিনি সব ধরনের অবৈধ অস্ত্র জব্দ করার দাবি জানান।