কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সম্মেলন মঙ্গলবার
কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলন আগামীকাল মঙ্গলবার। সম্মেলন সফল করতে এরই মধ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। জেলা শহরের গাইটাল এলাকায় একটি কমিউনিটি সেন্টারে ১০টায় সম্মেলন শুরু হবে।
সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং উদ্বোধক হিসেবে কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাহজাহানসহ অন্যান্য কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিত থাকার কথা। সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক ও কেন্দ্রীয় কমিটির সহসাংগঠনিক সম্পাদক শরীফুল আলম এই তথ্য জানিয়েছেন।
সম্মেলনে সভাপতিত্ব করবেন জেলা বিএনপির সভাপতি ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান। এর আগে ২০১১ সালে জেলা বিএনপির সর্বশেষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
প্রায় এক মাস আগে কেন্দ্রীয় কমিটি কর্তৃক সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করা হয়। এর পর পরই সম্মেলন সফল করার লক্ষ্যে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের মধ্যে একাধিক সভা অনুষ্ঠিত হয়। গঠন করা হয় ১৬টি প্রস্তুতি কমিটি। লিখিত আবেদন করেও সম্মেলন অনুষ্ঠানের জন্য দীর্ঘদিন স্থানীয় প্রশাসন কর্তৃক অনুমোদন না পাওয়ায় অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েন দলীয় নেতাকর্মীরা। অবশেষে গত ১৭ নভেম্বর কমিউনিটি সেন্টারের অনুমতি প্রাপ্তি সাপেক্ষে ১১টি শর্তে সম্মেলন অনুষ্ঠানের অনুমতি দেয় জেলা প্রশাসন।
এসব শর্তের মধ্যে রয়েছে সম্মেলন স্থলের বাইরে মাইক ব্যবহার ও তোরণ নির্মাণ না করা এবং মিছিল করে সম্মেলনে যোগ দেওয়া যাবে না। ১৯ নভেম্বর একটি কমিউনিটি সেন্টারের অনুমতি পাওয়ার পর নেতাকর্মীদের মধ্যে বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনার সৃষ্টি হয় এবং পুরোদমে সম্মেলনের প্রস্তুতি কার্যক্রম শুরু হয়।
প্রস্তুতির অংশ হিসেবে এরই মধ্যেই জেলা শহরের গাইটাল এলাকার নির্ধারিত কমিউনিটি সেন্টার সংলগ্ন মাঠে বিশাল প্যান্ডেল নির্মাণের কাজ শেষ পর্যায়ে। পাশাপাশি কাউন্সিল অধিবেশনের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে কমিউনিটি সেন্টারের মিলনায়তন। এ ছাড়া জেলার ১৩টি উপজেলায় রাস্তার দুই পাশে পোস্টার সাঁটানো হয়েছে। এর বাইরে সম্মেলনের সফলতা কামনা করে ও নিজ নিজ নেতার সমর্থনে ব্যক্তিগতভাবেও অনেক ব্যানার ফেস্টুন টাঙানো হয়েছে।
সম্মেলনে অংশগ্রহণের জন্য এরই মধ্যেই জেলা কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের পক্ষ থেকে ১৩টি উপজেলার কাউন্সিলরসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতাদের নিমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সদস্য সচিব মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘স্থান সংক্রান্ত জটিলতার কারণে শুরুতে ব্যাঘাত ঘটলেও বর্তমানে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। আশা করি উৎসব মুখর পরিবেশে একটি সফল সম্মেলন আমরা উপহার দিতে পারব।’
এদিকে অনুষ্ঠিতব্য সম্মেলনে কাঙ্ক্ষিত দলীয় পদ নিশ্চিত করতে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে এক ডজন নেতা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এজন্য মাঠ পর্যায়ে কাউন্সিলরদের মন জয় করতে তাদের সঙ্গে ব্যাপক গণসংযোগ চালাচ্ছেন। সেই সঙ্গে তদবির করছেন জেলা ও কেন্দ্রীয় নেতাদের দ্বারে দ্বারে। পদ প্রত্যাশী নেতাদের পাশাপাশি কর্মীরাও বসে না থেকে নিজ নিজ নেতার পদপ্রাপ্তি নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছে।
তবে কমিটি গঠন নিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান জানান, সম্মেলনে নেতাকর্মীসহ কাউন্সিলরদের আশা আকাঙ্ক্ষার প্রতি সম্মান রেখে ও কেন্দ্রীয় নেতাদের অনুমতিক্রমে সবার অংশগ্রহণে একটি গ্রহণযোগ্য কমিটি গঠন করা হবে। সর্বসম্মতি কিংবা কাউন্সিল উভয় প্রক্রিয়ায় কমিটি গঠনের সব প্রস্তুতি আমাদের আছে।
অপরদিকে মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ও রায়ে সাজা হওয়ার কারণে সম্মেলনের কার্যক্রমে অংশ না নিতে পেরে হতাশ অনেক নেতাকর্মী। অবরোধ কর্মসূচি চলাকালে নাশকতার মামলায় সাজাপ্রাপ্ত বর্তমানে জেলা কমিটির সিনিয়র সহসাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ভিপি খালেদ সাইফুল্লাহ সোহেল মুঠোফোনে বলেন, ‘মিথ্যা মামলায় সাজার কারণে সম্মেলনে আসতে না পারা আমার জন্য দুঃখজনক। তবে দলের নেতা-কর্মীদের প্রতি আমার আস্থা আছে। বিএনপির নেতা-কর্মীরা আমার প্রতি জুলুম-নির্যাতনের বিষয়টি উপলব্ধি করতে ভুল করবে না বলে আমি বিশ্বাস করি।’